কৃষ্ণকুমার দাস: তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস রাঢ়বঙ্গের জনসভায় চড়া রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে দেউচা পচামি এলাকার ১৭টি গ্রামে মাত্র সাতদিনে জলসংকট সমাধানের আশ্বাস দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানেই থামেননি তিনি, গালোয়ান সংঘর্ষে শহিদ সাইথিয়ার বেলগড়িয়া গ্রামের রাজেশ ওরাংয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাতদিনের মধ্যে রাজেশের বাবা সুভাষ ওরাংকে কৃষকবন্ধু, মা মমতাকে স্বাস্থ্যসাথী এবং লক্ষ্মীর ভান্ডার কার্ড করে দিতে দলীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দেন অভিষেক।
বলেছেন, “শহিদের পরিবারকে রাজ্যের তরফে সরকারি সমস্ত সাহায্য ও বোনকে ডিএম অফিসে চাকরি করে দেওয়া হয়েছে। কৃষক বন্ধু, স্বাস্থ্যসাথী ও লক্ষ্মীর ভান্ডার করার সরকারি প্রক্রিয়া ওদের জানা নেই বলে হয়নি। দু’তিন দিনের মধ্যে ওই কার্ডগুলি করে দেওয়ার কাজ শুরু করবেন স্থানীয় নেতৃত্ব। ” স্থানীয় বিধায়ক লীলাবতী সাহা ও পঞ্চায়েত নেতৃত্বকে দ্রুত কার্ডগুলি তৈরি করতে বলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ প্রমুখ। শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন অভিষেক। চা খেতে খেতে শিশুরা কে কোন ক্লাসে পড়ে তারও খবর নেন তিনি। একসময় ক্লাস ওয়ানে পড়া সাথীর গাল টিপে আদরও করেন যুব জনতার সবুজ সেনাপতি।
তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করেই বুধবার দুপুরে তারাপীঠ থেকে ময়ুরেশ্বর অভিষেক পৌঁছাতেই জনতার বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস তাঁকে ঘিরে আছড়ে পড়ে। পথে একাধিক মানুষ তাকে চিঠিতে স্থানীয় নানা অভিযোগ জমা দেন। এমনই দুটি চিঠিতে অভিষেক জানতে পারেন ভাড়কাটা গ্রামের জলসংকট ও গ্রামবাসীদের দুর্ভোগের কথা। যদিও এরপর জনস্রোতে ভাসতে ভাসতে তিনি পৌঁছে যান মহম্মদবাজারের জনসভায়। বক্তব্যের মাঝেই তিনি মঞ্চে বসে থাকা স্থানীয় বিধায়ক ও বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে নেন। জানতে চান, গ্রামের কটা বুথ এবং জলসংকট কতটা তীব্র? পাশাপাশি জনসভায় উপস্থিত গ্রামের আদিবাসী মহিলাদের কাছেও জল সংকট নিয়ে প্রশ্ন করেন। এরপরই কয়েক সেকেন্ড মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলার পরেই অভিষেক বলেন, “আমি আপাতত সাময়িক ভাবে একটা ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আগামী সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে ১৭ টা বুথেই একটি করে টিউবওয়েল বসানো হবে।” এর পরেই তাঁর ঘোষণা, “আমাকে তিনটে মাস সময় দিন। কথা দিচ্ছি, এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে দেব। আর জলের কোনও সমস্যা থাকবে না।” অভিষেকের ঘোষণায় বেজায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা পরে বলেন, ” অনেক নেতাকে জলের সমস্যা নিয়ে বলেছি, এই প্রথম কেউ অভিযোগ শোনার পর হাতে হাতে সমাধানের কথা বললেন। ভগবান ওনার মঙ্গল করুন।”
সন্ধায় পাথর চাপরি গ্রামে তিনি যাওয়ার পথে রাস্তার ধারে পাতা ডাঙায় খেলার মাঠে থামেন। দেখা করেন আমেরিকায় স্পেশাল অলিম্পিকে পদক পাওয়া পাপিয়া মূর্মুর সঙ্গে। অভিষেককে কাছে পেয়ে, খেলার মাঠের সংস্কার ও সরঞ্জামের জন্য আবদার করেন পাপিয়া। পাশাপাশি জার্মানিতে খেলতে যাওয়ার জন্য সরকারি সাহায্যের আবেদন করেন পদকজয়ী। সঙ্গে থাকা ব্যাক্তিগত সচিবকে সমস্ত কিছু নোট নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন অভিষেক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.