সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: আধার কার্ড না থাকলে মিলবে না রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি। নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরিতেও এখন আধার কার্ড বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক দেশবাসীকে আধার কার্ড বানাতে উৎসাহ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বেকায়দায় পড়েছেন সাধারণ মানুষের একাংশ। আধার কার্ড অনেকেরই নেই। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে আধার কার্ড তৈরি করতে গিয়ে অনেককেই মোটা টাকা খরচ করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। সময়ের অভাবে অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে, স্থানে আধার কার্ড তৈরির জন্য লাইনে দাঁড়াতে পারেন না। ফলে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই কেন্দ্রীয় পরিষেবা পেতেও সাধারণ মানুষকে খরচ করতে হচ্ছে নগদ টাকা।
কলকাতা তো বটেই, রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই একদল অসাধু ব্যক্তি মোটা টাকার বিনিময়ে আধার কার্ড তৈরির সেন্টার খুলে বসেছে। দুর্গাপুরের মহকুমা শাসকের দফতরের সামনে এমনই একটি সাইবার ক্যাফের খোঁজ মিলল। অন্তত তিনশো টাকার বিনিময়ে সেখানে দেদার তৈরি হচ্ছে আধার কার্ড। খবর পেয়ে সংবাদ প্রতিদিন-এর প্রতিনিধি ওই সাইবার ক্যাফেতে পৌঁছলে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন ক্যাফের মালিক মোমিন চৌধুরি। টাকার বিনিময়ে আধার কার্ড তৈরির অভিযোগ মানতে চাননি তিনি।
কিন্তু সত্যি ঘটনা ফাঁস হয়ে গেল খানিকক্ষণের মধ্যেই। আধার কার্ড তৈরি করতে এসেছিলেন একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্স মালা দাস। তিনি স্বীকার করে নিলেন, কার্যত বাধ্য হয়ে ৩০০ টাকার বিনিময়ে আধার কার্ড তৈরি করাতে এসেছেন। তাঁর বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই সাইবার ক্যাফের মালিক মমিন চৌধুরিও স্বীকার করে নেন, যে কার্ড প্রিন্ট করতে তিনশো করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। তবে কাউকে জোর করা হচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি। যাঁরা ইচ্ছুক তাদেরই কার্ড করে দেওয়া হচ্ছে টাকার বিনিময়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মধুমিতা মুখোপাধ্যায় ও দুর্গাপুর থানার পুলিশ। সাইবার ক্যাফের মালিক মোমিন চৌধুরিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্তুষ্ট না হয়ে মহকুমা শাসকের দফতরে নিয়ে যান। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে আধার কার্ড তৈরির বৈধ অনুমতি আছে কি না ওই ব্যক্তির। কেন টাকার বিনিময়ে আধার কার্ড তৈরি করছেন ওই ব্যক্তি, সে কথাও জানতে চাওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.