বাবুল হক, মালদহ: মর্গের পর মর্গে ঘুরেও মেলেনি ভাইয়ের দেহ। খুঁজতে বাকি ছিল একটি ঠিকানা। শেষ ঠিকানায় মিলল মালদহের হরিশচন্দ্রপুরের বছর তেইশের যুবক কৃষ্ণ রবিদাসের মুণ্ডহীন দেহ। বাড়িতে বোনের বিয়ের তোড়জোর এক নিমেষে শেষ।
পরিবার সূত্রে খবর,১১ জুন মালদহের (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুরের কৃষ্ণ রবিদাসের বোনের বিয়ে। সেই কারণেই হামসফর এক্সপ্রেসে বাড়ি ফিরছিলেন যুবক। চেপেছিলেন অভিশপ্ত ট্রেনে। ট্রেনে উঠেও বাড়িতে জানান। কিন্তু দুর্ঘটনার পর ফোন করে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি পরিবারের কেউ। ওড়িশা ছুটে গিয়ে তিনদিন ধরে নিখোঁজ ভাইয়ের খোঁজে হন্যে হয়ে বালেশ্বর, ভুবনেশ্বরের মর্গে-হাসপাতালে ঘুরে বেড়িয়েছেন দাদা অশোক। অবশেষে ভুবনেশ্বরের একটি অস্থায়ী মর্গে পকেটে থাকা আধার কার্ড ও বেল্ট দেখে কৃষ্ণর দেহ ‘শনাক্ত’ করেন তিনি। সোমবার সকালে সেখান থেকে ফোন করে বাড়িতে সেই দুঃসংবাদ জানিয়েছেন অশোক। কিন্তু মুণ্ডু নেই বলে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না ভাইয়ের দেহ। শোক আর উৎকণ্ঠায় রয়েছে পরিবার। পাশাপাশি এলাকাজুড়েও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
খবর পেয়ে কৃষ্ণর বাড়িতে পৌঁছন রাজ্যের রাষ্ট্রমন্ত্রী তাজমুল হোসেন। পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। মন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেন, ‘‘দুঃখজনক ঘটনা। আমরা প্রশাসনিক ভাবে জটিলতা মিটিয়ে দেহ আনার ব্যবস্থা করছি। পরিবারটির পাশে থেকে সবরকম সাহায্য করব।’’ মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নম্বর ব্লকের মালিওর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পিপুলতলায় বাড়ি কৃষ্ণ রবিদাসের। চার ভাই, দুই বোনের মধ্যে ছোট কৃষ্ণ। রয়েছেন বাবা হেমন্ত ও মা যশোদা রবিদাস। পাঁচ মাস ধরে চেন্নাইয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন কৃষ্ণ। সামনে ১১ জুন বোনের বিয়ে। তাই বাড়ি ফিরছিলেন। চেন্নাই থেকে হামসফর এক্সপ্রেসে অসংরক্ষিত কামরায় উঠেছিলেন। জটিলতা কাটিয়ে তাঁর দেহ ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য প্রশাসন। হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নম্বর ব্লকের বিডিও বিজয় গিরি বলেন, ‘‘দেহ ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.