গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: একপ্রকার অরন্ধনেই দিন কাটছিল। অবশেষে স্বস্তি। আফগানভূম (Afghanistan) থেকে ঘরে ফিরল ছেলে। এখন রীতিমতো উৎসবের আমেজ উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার কাঞ্জিলাল পরিবারে।
কাজ নেই। বেকারত্বের জ্বালা। পরিবারের অভাব ঘোচাতে গত তিন-চার মাস আগে কাজের খোঁজে ভিন দেশে পা দিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার বাসিন্দা বছর পঁচিশের কপিল কাঞ্জিলাল। কাবুলে মার্কিন সেনার ক্যান্টিনে ক্যাটারিংয়ের কাজ করতেন তিনি। কিন্তু তালিবান গোটা আফগানিস্তান দখল করে নেবে তা কে জানতো! কিন্তু ভাগ্যের ফের, ভিনদেশেই আটকে পড়েন বাদুড়িয়ার কপিলও।
তালিবানরা (Taliban) আফগানিস্তান দখল করার পর থেকেই বাদুড়িয়ার সলুয়া গ্রামের কাঞ্জিলাল পরিবারে শুধুই কান্নার রোল। নাওয়া খাওয়া ছেড়ে পরিবারের একমাত্র ছেলের চিন্তায় বিভোর ছিল গোটা পরিবার। অবশেষে চারদিন আগে আসে স্বস্তির খবর। জানা যায়, কাবুল ছেড়ে কাতারে আশ্রয় নিয়েছে ছেলে। পরিবারকে সে জানিয়েছিল দিন দুয়েকের মধ্যেই ফিরতে পারবে ঘরে। সেই প্রতীক্ষার অবসান সোমবার রাতে। কথা মতোই বাদুড়িয়া থানার চাতরা গ্রাম পঞ্চায়েতের সলুয়া গ্রামের বাড়িতে ফেরেন কপিল।
ছেলে বাড়িতে ফিরতেই তাঁকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা-মা। কপিলও নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি। মৃত্যু ভয় যে তাঁকেও তাড়া করছিল। কপিলের কথায়, “ভেবেছিলাম আর হয়তো পরিবারের সঙ্গে দেখা হবে না।” এখন আনন্দে কাঞ্জিলাল পরিবার। আত্মীয় স্বজনদের ঘনঘন ফোন আসছে। প্রতিবেশী, বন্ধু বান্ধবদের ভিড় বাড়িতে। সকলেই ব্যস্ত কাবুলের মাটিতে তালিবানি হামলার বিবরণ শুনতে। ঘুম ঘুম চোখে পরিবার পরিজনদের সেই ভয়াবহ তিক্ততার গল্পগুলোই শোনাচ্ছিলেন কপিল। এদিন কপিল জানান, “বাড়ি ফিরে আসতে পেরে খুশি। আর্মি ক্যাম্পের ভিতরে এতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি বুঝতে পারেনি। বাড়িতে টিভি দেখে বাবা-মা খুব চিন্তায় ছিল। পরে যখন ভয়াবহ পরিস্থিতি জানলাম তখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে। কোম্পানির সহায়তায় কাবুল থেকে পাড়ি দিলাম কাতারে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.