সম্যক খান, মেদিনীপুর: কথায় বলে রাখে হরি, মারে কে! তারই হাতে গরম প্রমাণ মিলল আরও একবার। মেদিনীপুর স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার মুখে লাফ দিয়ে আসানসোল-খড়গপুর প্যাসেঞ্জারের কামরায় উঠতে গিয়ে ছিটকে পড়েই গিয়েছিলেন সুজয়। চলন্ত ট্রেনের একের পর এক কামরার পাদানির ঘায়ে ট্রেনের ফাঁক গলে লাইনে পড়ে যাওয়ার আগের মুহূর্তে যেন দেবদূত হয়ে এলেন আরপিএফের কনস্টেবল ধর্মেন্দ্রকুমার যাদব। ভাগ্যিস পা টেনে ধরেছিলেন তিনি! তাই শেষ পর্যন্ত সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরলেন খড়গপুরের বাসিন্দা সুজয় ঘোষ। স্টেশনেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। আঘাত লাগলেও আপাতত তিনি বিপন্মুক্ত বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
পেশায় দোকানকর্মী সুজয় ঘোষের বাড়ি খড়গপুরের বারবেটিয়াতে। মেদিনীপুর শহরের স্টেশন রোডের উপরই একটি ওষুধ দোকানে কাজ করেন তিনি। প্রতিদিনই রাতে ট্রেন ধরে বাড়ি ফেরেন। শুক্রবার রাত ৯টা ৩৫ মিনিট নাগাদ আসানসোল-খড়্গপুর প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি মেদিনীপুর স্টেশনে এসে দাঁড়ায়। পাঁচ মিনিট পর ট্রেনটি ছেড়ে দেওয়ার মুখেই দৌড়ে এসে চলন্ত ট্রেনে উঠতে যান সুজয়বাবু। তাড়াহুড়ো করে উঠতে গিয়ে হাত ফসকে প্লাটফর্মের উপরই পড়ে যান তিনি। গড়াতে গড়াতেই একাধিকবার ট্রেনের কামরার পাদানিতে ধাক্কা লাগে তাঁর। মাথাও ফেটে যায়। ওই অবস্থা দেখে তাঁকে বাঁচাতে ছুটে যান কনস্টেবল ধর্মেন্দ্রকুমার যাদব। সুজয়বাবু ট্রেনের ফাঁক গলে রেলের চাকার তলায় চলে যাওয়ার মুখেই তাঁকে উদ্ধার করেন ওই কনস্টেবল । গোটা ঘটনাটি প্লাটফর্মের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে যায়।
এই ঘটনায় ধর্মেন্দ্র যাদব ও তাঁর পরিবারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সুজয় ঘোষ। তাঁর কথায়, “খুব শিক্ষা হল। তাড়াহুড়ো করে ট্রেন ধরার চেষ্টা আর কখনও করব না।” ওই দুর্ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ায় অভিনন্দনের বন্যায় ভেসে গিয়েছেন রেল পুলিশের ওই কনস্টেবল। মেদিনীপুর স্টেশনের আরপিএফের ওসি বিজেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, “কনস্টেবল ধর্মেন্দ্র যাদবের তৎপরতায় সাক্ষাৎ মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসেছেন ওই যাত্রী। ওই যাত্রীকে আগেই চলন্ত ট্রেনে উঠতে বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা শোনেননি।” স্টেশনে লাইন পারাপার থেকে শুরু করে চলন্ত ট্রেনে ওঠানামা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে মাইকে ঘোষণা করা হয়। সব যাত্রীকেই সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.