ধীমান রায়, কাটোয়া: সময় লেগেছে মাত্র তিন মিনিট ৪৮ সেকেন্ড। এই অল্প সময়ের মধ্যেই তিন ফুট বাই দুই ফুট ক্যানভাসের ওপর নিখুঁতভাবে আঁকলেন রাধাকৃষ্ণের ছবি। ‘ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডস-লন্ডন’-এ নাম তুললেন মঙ্গলকোটের সুখপুকুরিয়া গ্ৰামের বাসিন্দা শিল্পী রুদ্রপ্রসাদ ঘটক। পুনেতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে এই অ্যাওর্য়াড তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে রুদ্রপ্রসাদের এই সাফল্যে গর্বিত এলাকাবাসী। তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সমস্ত মহলের মানুষ।
মঙ্গলকোটের সুখপুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শ্যামলকুমার ঘটক ও লক্ষ্মীমহান্ত ঘটকের একমাত্র পুত্র রুদ্রপ্রসাদ। পড়াশোনায় যথেষ্ট মেধাবী ছিলেন। কিন্তু ছোট থেকেই ছিল তার ছবি আঁকায় অসম্ভব ঝোঁক। আবার মূর্তিও গড়তে পারেন তিনি। কলাভবন থেকে অঙ্কনের উপর পড়াশোনা করেন তিনি। পাশাপাশি পুনেতে এফটিআইআই থেকে চলচিত্রের শিল্প নির্দেশনার বিষয়য়ের উপর ডিপ্লোমা কোর্স পাশ করেছেন। রুদ্রপ্রসাদ জানান, “গত ৫ জুন তিনি ‘ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডসে’র জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। বিষয় ছিল ‘স্পিড পেন্টিং’। অর্থাৎ কত স্বল্প সময়ে একটি নির্দিষ্ট মাপের ছবি আঁকা যায়। তবে অবশ্যই সেই চিত্রের মানও বিচারকমণ্ডলির কাছে দেখার বিষয় ছিল।” রুদ্রপ্রসাদ একটি তিন ফুট উচ্চতার ও দুই ফুট চওড়া ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন রাধা কৃষ্ণের মুখমণ্ডলের প্রতিকৃতি। তবে পটচিত্রে দেখা চিরাচরিত ধাঁচের রাধাকৃষ্ণের মুখাবয়ব নয়, রুদ্রপ্রসাদের আঁকা চিত্রে রাধাকৃষ্ণের মানব রূপ ফুটে উঠেছে। এত অল্প সময়ে তাঁর আঁকা ছবির ভাষা মন কেড়ে নেয় বিচারকমণ্ডলীর। বাজিমাত করে বাড়ি ফেরেন মঙ্গলকোটের এই শিল্পী।
সম্প্রতি রুদ্রপ্রসাদ জানতে পারেন ফল। তরুণ শিল্পী রুদ্রপ্রসাদ বলেন, “ভবিষ্যতে আমি আরও এগিয়ে যেতে চাই। শিল্পের কোনও সীমা নেই। আমরা যতদিন বাঁচি ততদিন শিখে যাই। আমার শুভাকাঙ্ক্ষীদের আশীর্বাদ এবং অনুপ্রেরণায় এই সাফল্য পেয়েছি।” জানা গিয়েছে, রুদ্রপ্রসাদ বাংলা ও হিন্দি চলচিত্রে বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজে শিল্প নির্দেশক হিসাবে কাজ করেছেন। ২০২২ সালে তিনি ভারতীয় কলা সন্মান ও ভারতীয় কলা রত্ন পুরস্কার পেয়েছিলেন। এবার তার সাফল্যের মুকুটে নতুন পালক ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডস, লন্ডন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.