সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছিনতাইবাজকে ধরতে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া উলুবেড়িয়া স্টেশনে। ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেওয়ার সময় রেললাইনে প্রায় মাথা থেঁতলে যায় তাঁর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সৌরভ ঘোষ নামে ওই যুবক মারা গিয়েছেন বলেই দাবি চিকিৎসকদের। এই ঘটনার জেরে আবারও বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জামশেদপুরের বাসিন্দা সৌরভ ঘোষ নামে ওই যুবক কর্মসূত্রে হাওড়ায় থাকতেন। তাই প্রতি সপ্তাহের মতো শনিবার রাতেও নিজের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে আপ সম্বলপুর ট্রেনে চড়েন সৌরভ। এ সপ্তাহেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাই শুক্রবার রাতে ট্রেনে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলেন ওই যুবক। উলুবেড়িয়া স্টেশনের কাছে ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। আচমকা সেই সময় এক ছিনতাইবাজ তাঁর মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে মোবাইল বাঁচাতে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন সৌরভ। রেললাইনের উপর পড়ে মাথায় চোট পান তিনি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে শুরু করে ওই যুবকের।
রেলপুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই যুবককে উদ্ধার করে। সৌরভের কাছে থাকা পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তাঁর পরিজনদের ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর পায় রেলপুলিশ। সৌরভের দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেই পরিজনদের জানায় তারা। ইতিমধ্যেই সৌরভকে উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান ওই যুবক। রবিবার সাতসকালে জামশেদপুর থেকে সৌরভের পরিজনেরা হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় আসেন। তখন তাঁরা জানতে পারেন সৌরভ মারা গিয়েছেন। গোটা ঘটনায় রেলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিহত ওই যুবকের পরিজনেরা। রাতের ট্রেনে নিরাপত্তার সঠিক বন্দোবস্ত থাকলে এভাবে ওই যুবকের প্রাণহানি হত না বলেই দাবি তাঁদের।
এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “ছিনতাইবাজকে ধরতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু অত্যন্ত মর্মান্তিক। রাতের ট্রেনের নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করার চেষ্টা চলছে। এবিষয়ে ক্রমাগতই রেল পুলিশের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।” ময়নাতদন্তের পর রবিবার সন্ধেয় সৌরভের দেহ জামশেদপুর পাঠানো হবে। তাঁর মৃত্যু মানতে পারছেন না বাবা-মা। ছেলেকে হারিয়ে পাথর হয়ে গিয়েছেন দু’জনেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.