ছবিটি প্রতীকী
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: টিকিট পরীক্ষকের উপস্থিতিতে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ক্যানিং স্টেশনের কাছে এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে যাত্রীদের মধ্যে। গোবিন্দ মণ্ডল নামে ওই যুবকের মৃ্ত্যুর জন্য যাত্রীরা দায়ী করছেন টিকিট পরীক্ষকের দলকে। তাঁদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা চলাকালীন তিনি আচমকা ট্রেন থেকে পড়ে গেলেন নাকি তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হল, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ।
শনিবার দুপুরে সোনারপুরের বাসিন্দা গোবিন্দ মণ্ডল টিভি সারাইয়ের কাজে গিয়েছিলেন ক্যানিংয়ে। তিনি একটি ইলেকট্রিক সংস্থার কর্মী। কাজ শেষে ফিরছিলেন ডাউন ক্যানিং লোকালে। ক্যানিং থেকে ট্রেন ছাড়ার পরই একদল টিকিট পরীক্ষক ওঠেন। তাঁরা যাত্রীদের কাছে টিকিট দেখতে চান। এরপর গোবিন্দর কাছে টিকিট দেখতে চান পরীক্ষকের ওই দল। পরীক্ষকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরপরই ট্রেন থেকে কারও পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পান অন্যান্য যাত্রীরা। পাশের আপ লাইন দিয়েই যাচ্ছিল আরেকটি ট্রেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুটি ট্রেনের মাঝের অংশে পড়ে তিনি ছটফট করতে থাকেন। তারপরই তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে জিআরপি গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। ততক্ষণে টিকিট পরীক্ষকের দল চম্পট দিয়েছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
নিত্যযাত্রীরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিনই দুপুরবেলা ক্যানিং স্টেশন থেকে ডাউন ট্রেনে ওঠে একদল টিকিট পরীক্ষক। তাঁরা প্রতিটি স্টেশনে গোটা ট্রেনের যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা করেন। শনিবারও তেমনই হয়েছিল। ট্রেনযাত্রী শিক্ষক শান্তনু বিশ্বাস বলেন, ”আমাদের সামনে টিকিট পরীক্ষার কাজ চলছিল। ছেলেটির সঙ্গে টিকিট পরীক্ষা নিয়ে কিছু কথা কাটাকাটি হয় কর্তব্যরত টিকিট পরীক্ষকদের। ও বেশ কিছু টিকিট দেখায়। তারপরও টিকিট পরীক্ষকরা ওর শরীরের বিভিন্ন অংশ তল্লাশি করছিলেন। তারপর একটা শব্দ শুনতে পেলাম এবং এক যুবক পড়ে আছে রেল লাইনের মাঝে। টিকিট পরীক্ষকরা ক্যানিংয়ে নেমে গা ঢাকা দেয়।”
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ। এদিন কোন কোন টিকিট পরীক্ষক এই লাইনের টিকিট পরীক্ষা করছিলেন, খোঁজখবর করা হচ্ছে। তবে যাত্রীরা অভিযোগ তুলছেন টিকিট পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ, পরীক্ষকদের জন্যই গোবিন্দ ট্রেন থেকে ওভাবে পড়ে গিয়েছেন। পরীক্ষকদের এই অমানবিক আচরণে ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীরা। এভাবে এক তরতাজা যুবকের মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.