সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: টানা লকডাউনে তামিলনাড়ুতে আটকে পড়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সিমলা গ্রামের এক যুবক। কয়েকদিন পরই তিনি স্থির করেন, সাইকেলেই ফিরবেন বাড়ি। সেইমতো শুরু যাত্রা। ১৩ দিন সাইকেল চালিয়ে অবশেষে বুধবার গ্রামে ফিরলেন যুবক। খুশি পরিবার, তবে আপাতত তাঁকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
তিনমাস আগে কন্ট্রাকটরের অধীনে একটি এ সি মেশিন তৈরির কারখানার শ্রমিক হিসেবে তামিলনাড়ুতে গিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবার ২ নম্বর ব্লকের রামনগর থানার সিমলা গ্রামের বাসিন্দা বছর ২৩-এর আতিউল শাহ। স্বাভাবিক ছন্দেই চলছিল কাজ। কিন্তু আচমকা লকডাউনে সব কিছু বদলে গেল। লকডাউন ঘোষণা হতেই বন্ধ হতে গেল কারখানা। কিন্তু ফেরার রাস্তাও বন্ধ, তাই কর্মহীন হয়েও বেশ কিছুদিন তামিলনাড়ুতেই ছিলেন তিনি। পকেটে টান পড়ায় কোনওরকমে আধপেটা খেয়েই চালাচ্ছিলেন। কিন্তু সেভাবে চালানো আর সম্ভব হচ্ছিল না। তখনই যেকোনও মূল্যে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন ওই যুবক। সাইকেলেই ঘরে ফিরবে বলে স্থির করেন। সেইমতো তেরোদিন আগে তামিলনাড়ু থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে সাইকেলে যাত্রা শুরু করেন ওই যুবক।
প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার রাস্তা সাইকেলে পাড়ি দিয়ে বুধবার সকালে নিজের গ্রামে প্রবেশ করেন তিনি। ডায়মন্ড হারবার ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের অফিসে খবরটি পৌঁছানো মাত্রই যুব তৃণমূল কর্মীরা ওই যুবককে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা তাঁকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেন। ওই যুবককে নজরে রাখার কথাও বলেন চিকিৎসকরা। এদিন ডায়মন্ড হারবার ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি মাহাবুবার রহমান গায়েন তামিলনাড়ু ফেরত ওই যুবকের হাতে খাদ্যসামগ্রী ও কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস তুলে দেন। বাড়ি থেকে যুবক যাতে না বের হন,পরিবারের সদস্যদের সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলেন। পাশাপাশি, কোনও রকম অসুস্থতা, জ্বর, সর্দি-কাশি কিংবা শ্বাসকষ্ট হলেই তাঁরা অবশ্যই যেন স্থানীয় যুব তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সেই পরামর্শও দেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.