দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: সিঙ্গুরে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুতে একজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃত যুবক মূল অভিযুক্তের ভাই। তাকে জেরা করেই চারজনের খুনের কিনারা সম্ভব হবে বলেই আশাবাদী তদন্তকারীরা।
বৃহস্পতিবার সকালেই সিঙ্গুরে প্রভাবশালী প্যাটেল পরিবারের চার সদস্য খুন হন। প্রথম থেকে সন্দেহের তালিকায় নিহতদের নিকট আত্মীয়রা। নিহত দীনেশ প্যাটেলের মামাতো ভাই যোগেশই ওই চারজনকে খুন করেছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তবে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই এলাকাছাড়া যোগেশ। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে দু’জনকে আটক করা হয়। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি মেলায় শুক্রবার সকালে যোগেশের ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই এলাকায় স্নিফার ডগ নিয়ে গিয়ে তল্লাশি চালানোর কথা।
সিঙ্গুরের নান্দায় দীনেশ প্যাটেলের নিজস্ব কাঠ চেরাইয়ের একটি করাত কল আছে। এই ব্যবসা ও পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে আত্মীয়দের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল। অভিযোগ, স্থানীয়রা দীনেশের মামাতো ভাই যোগেশ ধাওয়ানীকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে দীনেশ প্যাটেলের বাড়িতে ঢুকতে দেখেন। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যেই চিৎকার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে যান। দেখেন ওই আত্মীয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। ঘরের ভিতরে বাবা, ছেলে, বউমা ও নাতি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। সারা ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। চারজনেরই শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্র এবং ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা দীনেশ প্যাটেল ও তাঁর স্ত্রী অনসূয়াকে মৃত বলে জানান। দীনেশবাবুর ছেলে ভাবিক প্যাটেল ও বাবা পাভজি প্যাটেলের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁদের মৃত্যু হয়।
সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্যাটেল পরিবারে অশান্তি চলছিল। আর তার জেরেই খুন করা হয়েছে চারজনকে। দীনেশের মামাতো ভাই যাদব এই ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিল বলেই জানা গিয়েছে। তবে খুনের ঘটনায় যাদবের ভাইয়ের ঠিক কী ভূমিকা ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ধৃতকে জেরা করে খুনের ঘটনার জট খুলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.