নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: মায়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিয়ে এমনিতেই সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক মহলের দ্বারস্থ হয়ে বারবার দরবার করেছে। কিন্তু, এখনও একটি রোহিঙ্গাকেও মায়ানমার পাঠাতে পারিনি তারা। এই অবস্থায় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে শরণার্থী শিবির ছেড়ে এদিক-ওদিকে পালাচ্ছে রোহিঙ্গারা। শুক্রবার রাতে তাদের মতোই একজন ধরা পড়ল উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায়। বছর কুড়ির ওই যুবতীর নাম মীর শাহির। শনিবার আদালতে তোলা হলে তাকে বনগাঁ মহকুমা উপ সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘ চাপ দিলেও রোহিঙ্গাদের মোহ ভেঙেছে বাংলাদেশের। একসময়ে মায়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের হৃদয় কাঁদলেও বর্তমানে কড়া অবস্থান নিয়েছে। নজরদারি চালানোর পাশাপাশি চট্টগ্রামের শরণার্থী শিবির এলাকায় মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। এই অবস্থায় শরণার্থী শিবির ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে চোরাপথে রোহিঙ্গারা পাড়ি দিচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায়।
কয়েকদিন আগে একইরকম ভাবে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির ছেড়ে স্বামীর হাত ধরে চোরাপথে ভারতে আসার পরিকল্পনা নেয় মীর। দালালের সাহায্যে স্বামীর সঙ্গে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করতেও সক্ষম হয়। কিন্তু, তারপরই অজানা দেশে এসে কেমন সব যেন গোলমাল হয়ে যায় তার। রাতের গাঢ় অন্ধকারে সীমান্ত পার হওয়ার সময় বিজিবি আর বিএসএফের কড়া চৌকিদারিতে স্বামীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সে। কোথায় দেশ, কোথায় স্বামী সবকিছুই যেন হারিয়ে যায় এক মুহূর্তের তার কাঁটা পেরোনোর চোরা অভিযানে। শেষ পর্যন্ত এপারে ঢুকে পড়তে সক্ষম হলেও স্বামীকে আর খুঁজে পায়নি সে।
শুক্রবার গভীর রাতে রাস্তায় টহলদারি চালানোর সময় উদ্দেশ্যহীনভাবে মীরকে ঘুরতে দেখে গাইঘাটা থানার পুলিশ। তারপর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া তেঁতুলবেড়িয়া থেকে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। আর রাতভর জেরার পর স্বামী ও স্বজনহারানো ওই যুবতীকে গ্রেপ্তার করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.