ফাইল ছবি।
শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে পুলিশের জালে স্বামী। অভিযোগ, প্রমান লোপাটের জন্য খুনের পর সেপটিক ট্যাংকে স্ত্রী’র দেহ লুকিয়ে রাখে অভিযুক্ত। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন চয়নপাড়া এলাকায়। জানা গিয়েছে, স্ত্রী’র বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহেই তাঁকে খুন করে অভিযুক্ত। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ছয়েক আগে লতা দাস নামে ওই মহিলার সঙ্গে বিয়ে হয় অভিযুক্ত গোপাল দাসের। বিয়ের পর থেকেই জলপাইগুড়ি থানা এলাকার আশ্রমপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন ওই দম্পতি। পরিবার সূত্রে খবর, বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী’র বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতেন গোপাল। তা নিয়ে ওই দম্পতির মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। অভিযোগ, প্রায়ই স্ত্রীকে মারধরও করতেন ওই ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার অশান্তি চরমে ওঠে। এদিনই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন লতা। তবে বিপদ হয়নি৷ এরপর, শুক্রবার সকালে বাপের বাড়ি চলে যান তিনি। রাতে আচমকা শ্বশুরবাড়িতে হাজির হয় অভিযুক্ত গোপাল। সূত্রের খবর, শুক্রবার মাঝরাতে গোপাল তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কাছে অভিযোগ করেন, লতা তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে। শনিবার সকাল লতার কোনও খোঁজ না মেলায় পরিবারের তরফে জলপাইগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাঁদের সঙ্গেই থানায় গিয়েছিল মৃতার স্বামী। তখনই তাঁর কথায় সন্দেহ হয় পুলিশের।
শনিবারই গোপালকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় ভেঙে পড়েন গোপাল। স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় সে। জানান, শুক্রবার মাঝরাতে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীকে খুন করে দেহ লোপাট করেছে৷ তার থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার লতার বাপের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। জানা গিয়েছে, বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হয় ওই মহিলার দেহ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সন্দেহের বশেই স্ত্রীকে খুনের ছক কষেছিলেন গোপাল। পরিকল্পনা মাফিক তা করেও ফেলেন। কিন্তু ওই দম্পতির অশান্তির কথা জানতেন মৃতার বাপের বাড়ির সদস্যরা। সেই কারণেই, লতাদেবী নিখোঁজ হওয়ার কথা জানতে পেরে গোপালকে নিয়েই থানায় হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। আর তাতেই রহস্যভেদ হল। আপাতত অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।স্ত্রী’র বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে অভিযুক্তের সন্দেহের আদৌ কোনও ভিত্তি আছে কিনা, সে বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.