গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: যে কাজ করার ভার পুলিশের, সেই কাজ করে মানবিকতার নজির গড়লেন বসিরহাটের এক চিকিৎসক। ৬ দিন নিখোঁজ থাকা এক মহিলাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিলেন বসিরহাটের স্বাস্থ্য দপ্তরে উপ-স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল বিশ্বাস ও তাঁর সঙ্গীরা।
ছ’দিন আগের হারিয়ে গিয়েছিলেন মধ্যমগ্রামের (Madhyamgram) চণ্ডীগড় মেইন রোডের বাসিন্দা বিউটি বসু। ঘর হারিয়ে ঠাঁই হয়েছিল হৃদয়পুরে স্টেশনে। প্লাটফর্মই ছিল তাঁর বর্তমান ঠিকানা। জানেন না কোথায় তাঁর বাড়ি, কে তার আপনজন। যেন স্মৃতি কুঁড়ে খায়, তবুও অসহায়। হারিয়ে যাওয়া মায়ের একটা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছিলেন ছেলে রাজীব বসু। সেই ছবি পোঁছয় চিকিৎসক শ্যামলবাবু ও তাঁর নলেজ সোসাইটির সদস্যদের কাছে।
প্রতিদিনের মতোই কাজ সেরে মঙ্গলবার গভীর রাতে না খেতে পাওয়া দুঃস্থ মানুষদের জন্য রান্না করা খাবার বিলি করতে একাধিক স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় যান চিকিৎসক শ্যামল বিশ্বাস ও তার নলেজ সোসাইটির সদস্যরা। সেখানেই হঠাৎ দেখতে পান এক প্রৌঢ়া হৃদয়পুর স্টেশনের প্লাটফর্মে বসে আছেন। তাঁকেও খাবার দেওয়া হয়। নাম ঠিকানা জিজ্ঞাসা করা হয়। কিন্তু সে কিছুই বলতে পারে না। সন্দেহ হয় এ সেই মহিলা নয় তো ৬ দিন আগে যার ছবি ও ফোন নং এক ভদ্রলোক দিয়েছিলেন। ছবির মিল পাওয়া তারা মহিলার ছেলে রাজীব বসুকে ভিডিও কল করেন। বিউটি দেবীর ছেলে রাজীব মাকে দেখে চিনতে পারেন। তৎক্ষণাৎ তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
৬ দিন পর হারিয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যকে খুঁজে পেয়ে আপ্লুত বসু পরিবার। কান্নায় ভেঙে পড়ে খুশির কথা জানালেন বিউটি বসুর ছেলে ও স্বামী। আর এই সব কিছুকে সম্ভব করে তুললেন বসিরহাট জেলা হাসপাতালের উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও নলেজ সোসাইটি। ঘটনাটি আরেকবার প্রমান করে দেয় রাতবিরেতে তাঁরাই ভরসা৷ নলেজ সোসাইটির সম্পাদিকা শিবানী বিশ্বাস বলেন, “এই রকম একটা কাজ করতে পেরে আজ নিজেদের ধন্য মনে হচ্ছে। সার্থক হয়েছে তাদের সমাজসেবার উদ্দেশ্যে। তিনি জানান, আজকের ঘটনায় মূল কৃতিত্ব সোসাইটির দুই সদস্য বিশ্বজিৎ গুহ ও তৃশান বিশ্বাসের।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.