বাবুল হক, মালদহ: তরুণীকে বাপের বাড়িতে রেখে এসে ফের বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলেছিলেন স্বামী। এই খবর পাওয়া মাত্রই স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির সামনে ধরনায় বসেন স্ত্রী। তারপর পাঁচ দিন পেরিয়ে গিয়েছে, এখনও দেখা মেলেনি তরুণীর স্বামীর। গোটা ঘটনায় উদাসীন অভিযুক্তের পরিবার। তবে নাছোরবান্দা তরুণী। তাঁর সাফ কথা, অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত ধরনা তুলবেন না তিনি।
জানা গিয়েছে, মালদহের (Maldah) রতুয়া-২ ব্লকের সম্বলপুর টাল গ্রামের বাসিন্দা নাসিমা খাতুন নামে ওই তরুণী। লেখাপড়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই সামসিতে একটি মেসে থাকতেন। সেখানে থাকাকালীন মাস আটেক আগে মালদহের সাহারাতলার বাসিন্দা মহম্মদ সাহেবের সঙ্গে দেখা হয় নাসিমার। প্রথম আলাপেই ফোন নম্বর বিনিময় করেন তাঁরা। এরপর নিয়মিত ফোনে কথা হতো। তরুণীর কথায়, দীর্ঘ পাঁচ মাস প্রেম করার পর ২১ জুলাই মুসলিম বিবাহ আইন ও শরীয়ত মতে বিয়ে করে সাহেবের বাড়িতে যায় দম্পতি। কিন্তু যুবকের পরিবার এই বিয়ে মানেনি। উলটে নবদম্পতিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তাঁরা।
নিরুপায় হয়ে সস্ত্রীক সাহেব কুশরাক্ষা গ্রামে এক ব্যক্তির বাড়িতে পনেরোদিন আশ্রয় নেয়। এরপর সেখান থেকে সামসি পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এক ভাড়া বাড়িতে ওঠে ওই দম্পতি। সেখানে সুখেই দিন কাটছিল তাঁদের। নাসিমার পরিবার মেনেও নিয়েছিল সাহেবকে। কিছুদিন যেতে না যেতে আচমকা ছন্দপতন। জানা গিয়েছে, ইদের পর হঠাৎ উধাও হয়ে যান সাহেব। দিন চারেক স্ত্রীর সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করেননি তিনি। এরপর ফিরে এসে বিবাহ বিচ্ছেদের দাবি জানান। জোর করে নাসিমাকে রেখে আসে তাঁর বাবার বাড়িতে।
এরই মাঝে সোমবার নাসিমা জানতে পারেন, ফের সাহেব বিয়ে করতে চলেছে। তখনই সাহাড়াতলায় শ্বশুরবাড়িতে হাজির হন তরুণী। শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তাঁকে মানতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে ধরনায় বসেন নাসিমা। বিষয়টি সামসি ফাঁড়ির পুলিশকেও জানান তিনি। এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক সাহেব। তাঁর দাদা শেখ সাদ জানিয়েছেন, “ভাই কোথায় বিয়ে করেছে তা আমরা কেউ জানিনা। ভাই এখন বাড়িতে নেই। বাড়িতে এলে জিজ্ঞেস করব।” নিজের অবস্থানে অনড় নাসিমা। তাঁর সাফ কথা, “স্ত্রী অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত ধরনা চলবে। প্রয়োজনে এখানেই আত্মহত্যা করব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.