সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: শারীরিক যন্ত্রনায় চোখের সামনে কাতরাচ্ছে তরতাজা ছেলে। ইচ্ছে থাকলেও চিকিৎসার খরচ চালানো কার্যত দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে দুর্গাপুরের বন্দনা সাঁপুইয়ের কাছে। তাই ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই মহকুমা শাসকের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানালেন বৃদ্ধা। বিষয়টি জানতে পেরেই সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর। কিন্তু আদৌ সাহায্য মিলবে কি? সেই চিন্তায় বৃদ্ধা।
দুর্গাপুর পুরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের আর্টারিয়াল রোডের বাসিন্দা বন্দনা সাঁপুই। স্বামী পরিমলচন্দ্র সাঁপুইয়ের মৃত্যু হয়েছে দীর্ঘদিন আগেই। মিশ্র ইস্পাত কারখানার কর্মী ছিলেন তিনি। এখন মা-ছেলের সংসার। কিন্তু ওই দম্পতির একমাত্র ছেলে তুষারের দুটি কিডনিই বিকল। সুগারের জন্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে দুটি চোখও। ৩৩ বছরের তরতাজা যুবকের নিয়মিত ডায়ালিসিস চলছে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বিগত দু’বছর ধরে ছেলের চিকিৎসার জন্য সমস্ত কিছুই বিক্রি করে ফেলেছেন বৃদ্ধা। প্রশাসনিক দপ্তরে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। কোনও সাহায্যই মেলেনি। এরপরই মহকুমা শাসকের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছেন ওই বৃদ্ধা।
বিষয়টি জানতে পেরে ওই বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দুর্গাপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তথা ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৃগেন্দ্রনাথ পাল। তিনি জানিয়েছেন, ওই যুবকের চিকিৎসায় সবরকম সাহায্য তিনি করবেন। বলেন, “দুর্গাপুর পুরসভা এলাকায় কাউকেই স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে দেব না। যেখানে রাজ্য সরকার প্রতিটা মানুষের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা নিয়েছেন, স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে নতুন নতুন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, সেখানে এই ঘটনা কখনই ঘটতে দেব না।” সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বন্দনা সাঁপুই ও তাঁর ছেলেকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আওতাভুক্ত করবেন বলেও জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে জানান, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.