Advertisement
Advertisement
শিশু

শ্বাসনালীতে খাবার আটকে বিপত্তি, ‘হাইমলিখ’ পদ্ধতির ব্যবহারেই প্রাণ বাঁচল শিশুর

শ্বাসরোধ হয়ে গেলে মানুষকে বাঁচানোর বা নিজে বাঁচার একমাত্র উপায় হাইমলিখ কৌশল।

A woman saved a child in Bankura's sonamukhi area
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:July 3, 2019 11:33 am
  • Updated:July 3, 2019 12:18 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: ‘ভাগ্যিস তুমি পদ্ধতিটা প্রয়োগ করেছিলে। তাই বাচ্চাটা প্রাণে বাঁচল।’ এক নিঃশ্বাসে কথাগুলি বলছিলেন বাঁকুড়ার সোনামুখী হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তারবাবুরা। ‘প্রাণদাতা’ অবশ্য ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন বাঁকুড়ার রাধানগর বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌম্য সেনগুপ্তকে। সৌম্যবাবুর থেকেই ‘হাইমলিখ’ পদ্ধতিটি রপ্ত করেছিলেন রাত্রি কুণ্ডু। সেটি প্রয়োগ করেই দিদির ছ’মাসের বাচ্চার শ্বাসনালিতে আটকে যাওয়া খাবার বের করেন তিনি। প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন খুদে বোনপো ধ্রবজ্যোতির।

[আরও পড়ুন: বিজেপির বিক্ষোভ মিছিলে নচিকেতার ‘কাটমানি’ গান, জল্পনা রাজনৈতিক মহলে]

কাজ সেরে দুপুর দু’টো নাগাদ বাড়ি ফিরেছিলেন রাত্রি কুণ্ডু। দিদি মনা বিট তখন ছ’মাসের ছেলেকে ডাল সিদ্ধ দিয়ে ভাত খাওয়াচ্ছিলেন। হঠাৎ ধ্রুবর গলায় খাবার আটকে যায়। শ্বাস নিতে পারছিল না শিশুটি। দেরি না করে হাইমলিখ টেকনিক প্রয়োগ করেন রাত্রি। মুখ থেকে খাবার বেরিয়ে আসে এক দমকায়। বিপন্মুক্ত হয় শিশু। পরে শিশুটিকে সোনামুখী হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাবিত্রী হাঁসদা সব দেখেশুনে রাত্রিকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানান। বলেন, হাইমলিখ প্রকৌশল প্রয়োগে একটু দেরি হলেই বাচ্চাটিকে আর বাঁচানো যেত না। সৌম্য সেনগুপ্ত জানালেন, “রাত্রি আমাদের স্কুলে ট্রেনিং নিতে আসেন। তখনই হাতে-কলমে ম্যানিকুইন সহযোগে হাইমলিখ টেকনিক শেখানো হয়।” সৌম্যবাবুর শেখানো পদ্ধতি এর আগেও অনেক প্রাণ বাঁচিয়েছে। একজন ডাক্তারও চলন্ত ট্রেনে নিজেকে বাঁচিয়েছেন এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে। তবে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। সৌম্য জানালেন, “প্রবাসী বিজ্ঞানী দিলীপ সোম আমাদের দু’টি ম্যানিকুইন ও একটি কৃত্রিম ‘ডিফ্রাইব্লেটর ট্রেনার’ উপহার দিয়েছিলেন। তাই দিয়েই এখন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।”

Advertisement

কী এই হাইমলিখ প্রকৌশল?

শ্বাসরোধ হয়ে গেলে মানুষকে বাঁচানোর বা নিজে বাঁচার একমাত্র কৌশল হাইমলিখ কৌশল। এটি একটি জীবনদায়ী কৌশল। উদ্ধারকারী এক্ষেত্রে সময় পান মাত্র ৪ মিনিট। অর্থাৎ যা করার ৪ মিনিটের মধ্যেই করতে হবে! শ্বাস রোধ হওয়ার আগে ফুসফুসে জমে থাকা বাতাসে চাপ প্রয়োগ করে শ্বাসরোধ ঘটানো বস্তুটিকে বের করে দেওয়া হয়। এক বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে বাচ্চাকে এক হাতে উপুড় করে শুইয়ে পিঠের তেকোনাকার হাড়ের মাঝে ৪৫ ডিগ্রি কোণে পাঁচটা ধাক্কা মারতে হবে এবং তারপর ডান হাতে শুইয়ে বুকের দুই স্তনবৃন্তের মাঝে দু আঙ্গুল দিয়ে ঘন এক ইঞ্চি গভীর চাপ দিতে হবে। বড়দের ক্ষেত্রে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে নাভি মণ্ডলে জোরে চাপ দিতে হবে। আর নিজের ক্ষেত্রে শক্ত কোনো চেয়ারে বা টেবিলের কোনায় নিজের পেটের নাভি মণ্ডলে জোরে ধাক্কা মারতে হবে।

[আরও পড়ুন: ইভটিজিং রুখতে পঠনপাঠনে কোপ! সপ্তাহে তিনদিন করে ক্লাস ছাত্র ও ছাত্রীদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement