রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: বাইসনের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল হৃৎপিণ্ড। বাঁচবেন কি না, সেই আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। জটিল অস্ত্রোপচার করে নজির গড়ল আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল। মরণাপন্ন রোগীকে নবজীবন দান করে চিকিৎসকদের প্রশংসা করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর।
আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের চকোয়াখেতি গ্রাম পঞ্চায়েতের মথুরাহাট গ্রামের বাসিন্দা হেপা ওড়াও। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল থেকে একটি বাইসন গ্রামে ঢুকে পড়ে। বাইসনটি শিং দিয়ে বছর ষাটের ওই বৃদ্ধার উপর হামলা চালায়। তার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হৃৎপিণ্ড। রক্তাক্ত অবস্থায় সঙ্গে সঙ্গে হেপাকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। চিকিৎসকরা আর সময় নষ্ট না করে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেন। এরপর জটিল অস্ত্রোপচার করা হয়। তিনি বর্তমানে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভরতি। সফল অস্ত্রোপচারের ফলে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ওই বৃদ্ধা।
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মন বলেন, “এই ধরনের অস্ত্রোপচার সাধারণত জেলা স্তরের হাসপাতালে হয় না। কিন্তু এই রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তর করতে গেলে মৃত্যু হতই। তাই চিকিৎসকরা সাহস জুগিয়ে জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করতে রাজি হয়ে যান। আমিও আর সময় নষ্ট করিনি। চিকিৎসক পুষ্পজিৎ মিশ্রের নেতৃত্বে চার চিকিৎসক ও একজন নার্সকে নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করি। সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। হাসপাতালের সিসিইউতে ভরতি থাকলেও রোগী সুস্থ রয়েছেন। আমরা আশাবাদী তাঁকে সুস্থ অবস্থাতেই হাসপাতাল থেকে ছাড়তে পারব।”
চিকিৎসক পুষ্পজিৎ মিশ্র বলেন,“বাইসনের শিংয়ের গুঁতোয় বুকের হার ভেঙে গিয়েছিল। এই অবস্থায় প্রথমে আমরা হাড়গুলোকে জোড়া দিলাম। বুকের পাজর ভেঙে হৃৎপিন্ড বেরিয়ে আসার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। আশার কথা আমরা সফলভাবে এই অস্ত্রোপচার করেছি। রোগীর রক্তচাপ থেকে অন্যান্য সব কিছুই স্বাভাবিক। আশা করি সুস্থ করে এই রোগীকে আমরা হাসপাতালে থেকে ছেড়ে দিতে পারব। বুকে নল ঢুকিয়ে এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এই নল ঢোকানোর জন্য ওয়াটার ফিল ব্যাগ প্রয়োজন। যা হাসপাতালে ছিল না। কিন্তু আমাদের হাসপাতাল সুপার সেই ব্যাগের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।” জখম হেপার পরিবারের লোকেরা এই দ্বিতীয় জীবন পেয়ে খুব খুশি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.