সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: এক গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে। অভিযোগ, গায়ের রং কালো হওয়ায় তাঁকে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কাছে নিত্য গঞ্জনা শুনতে হতো। এমনকী ঘুরপথে পণ আদায়ের অভিযোগও উঠছে৷ শোনা যাচ্ছে, বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ তো বটেই, মারধর করা হত তাঁকে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, অপমানেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন ওই বধূ। ইতিমধ্যেই মৃতার স্বামী, শাশুড়ি ও ননদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে মগরাহাটের জয়পুরের বাসিন্দা পূর্ণিমা সামন্তের সঙ্গে বিয়ে হয় বিষ্ণুপুরের গগন গোয়ালিয়ার বিলাস পাত্রের। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই অশান্তি শুরু হয় দম্পতির মধ্যে। অভিযোগ, গায়ের রংয়ের জন্য নিত্য শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কটাক্ষের শিকার হতেন পূর্ণিমাদেবী। এমনকী বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য তাঁকে চাপ দিতেন শাশুড়ি ও ননদ। অর্থাৎ ঘুরপথে পণ আদায়ের চেষ্টাও কম হয়নি৷ মেয়ের সংসারের কথা ভেবে নিজের ক্ষমতার বাইরে গিয়েও টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন পূর্ণিমার বাবা। নিজের সর্বস্ব বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা তুলে দেন মেয়ের হাতে।
অভিযোগ, এরপর থেকেই বাড়তে থাকে টাকার দাবি। চাহিদা মতো টাকা না দিতে পারায় বাড়তে থাকে অত্যাচারের মাত্রা। বাধ্য হয়ে ২৬ মে বিষয়টি জানিয়ে বিষ্ণুপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পূর্ণিমার বাপের বাড়ির সদস্যরা। শনিবার বিকেলে সমস্যা মেটাতে পূর্ণিমার শ্বশুরবাড়ি ও বাপের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে আলোচনার আয়োজন করে গ্রামবাসীরা। কিন্তু তাতে রাজি ছিলেন না পূর্ণিমা। মেয়ের কথায় তাই আলোচনা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হন বধূর বাবা-মা।
এরপর রবিবার সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার হয় পূর্ণিমার ঝুলন্ত দেহ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। মৃতার বাবার অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই খুনের পর প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে পূর্ণিমাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে।সন্দেহের আওতায় মৃতার শাশুড়ি, ননদ ও স্বামী৷ তাদের জেরা করেই প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে তৎপর পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.