মনিরুল হক, উলুবেড়িয়া: বিছানার উপর পড়ে রয়েছে স্বামীর রক্তাক্ত দেহ। রক্তে ভেসে যাচ্ছে চতুর্দিক। মাথায় এবং যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষতচিহ্ন। ওই ব্যক্তির স্ত্রীই ছেলেদের ডেকে এই দৃশ্য দেখায়। মুখে বলে, “দেখ তোদের বাবাকে কী করে ফেলেছি।” হাওড়ার পাঁচলার (Panchla) জুজারসাহা গ্রাম পঞ্চায়েতের মালিপুকুর মল্লিকপাড়ার ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক প্রায় সকলেই। পুলিশ এই ঘটনায় নিহত মহসিনের স্ত্রী মনিরা মল্লিককে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে মনিরা তার ছেলেদের ডেকে বলে আমি তোর বাবার কী করে ফেলেছি জানিনা। ছেলেরা মহসিনের ঘরে গিয়ে দেখেন বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানার উপরে পড়ে রয়েছে। তাঁর মাথায় একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাত। রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। তাঁদের চেঁচামেচিতে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তারপরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পাঁচলা থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান বঁটি দিয়ে মহসিনকে খুন করা হয়েছে। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পাশাপাশি তাঁর যৌনাঙ্গেও গুরুতর আঘাত রয়েছে। যে বঁটি দিয়ে স্বামীকে কোপানো হয়েছিল সেই বঁটিটিও পুলিশ উদ্ধার করেছে।
জানা গিয়েছে, মহসিন ও মনিরার দুই ছেলে। মিলন মল্লিক ও আকাশ মল্লিক তাঁদের ঘরেই ছিলেন। শনিবার রাতে একটি ঘরে মহসিন ও মনিরা ঘুমিয়েছিল। আকাশ জানিয়েছেন, “মা আমাকে বলে আমি তোর বাবাকে কী করে ফেলেছি দেখে যা।” ছুটে গিয়ে দেখি বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা মেঝে। বাবার শরীরটা আবার কম্বল দিয়ে ঢাকা ছিল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক অশান্তির ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে মনিরা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে পুলিশের দাবি। কয়েকদিন ধরে ওই মহিলা ওষুধ খাচ্ছিলেন। তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন মৃত মহসিনের পায়ে কাদার দাগ দেখতে পান। এই ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.