বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে প্রেমিকাকে খুনের অভিযোগ উঠল যুবকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে প্রেমিকও৷ গুরুতর জখম অবস্থায় বর্তমানে চিকিৎসাধীন ওই যুবক। শুক্রবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার হাঁসখালির মুড়াগাছা এলাকায়।
নদিয়ার হাঁসখালি থানার ভায়না গ্রামের বাসিন্দা বছর বাইশের রত্না মল্লিক। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে এলাকারই বাসিন্দা ও সহপাঠী বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল তাঁর। কিন্তু হঠাৎই অন্য এক যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে রত্নার। ফলে বিশ্বজিৎকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন তিনি। এই নিয়ে বিশ্বজিৎ ও রত্নার মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। প্রেমিকাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টাও করে বিশ্বজিৎ। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি রত্না। এরপরই প্রেমিকাকে খুনের ছক কষতে শুরু করে বিশ্বজিৎ।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে মিলননগরে বান্ধবীর বিয়েতে যান রত্না। খবর পেয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে মিলননগরে হাজির হন বিশ্বজিৎও। কিছুক্ষণের জন্য প্রেমিকাকে এলাকারই একটি মাঠে ডেকে পাঠায় সে। অভিযোগ, সেখানেই ছুরি দিয়ে রত্নাকে কোপানো হয়৷ বিষয়টি টের পেয়েই ঘটনাস্থলে যান ওই যুবতীর পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা হাজির হতেই তাঁদের খুনের হুমকি দিতে শুরু করে অভিযুক্ত বিশ্বজিৎ। এরপর আচমকা নিজের পেটে ছুরি চালায় বিশ্বজিৎ। তবে মেয়ের অবস্থা দেখে বিশ্বজিতের দিকে গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব হয়নি তাঁদের পক্ষে৷ কোনওক্রমে রত্নাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা৷ চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
পেটে ছুরিবিদ্ধ অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ ওই মাঠেই পড়ে ছিল বিশ্বজিৎ। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিশ্বজিৎকে উদ্ধার করে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভরতি করে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন ওই যুবক। মৃতার ভাই জানান, “ওই যুবকের সঙ্গে দিদির কী সম্পর্ক তা আমাদের জানা নেই। আমরা কোনওদিনই ওই যুবককে দেখিনি।” অভিযুক্ত যুবকের মায়ের কথায়, “চার বছর ধরে ওদের সম্পর্ক ছিল। কয়েকদিন ধরে ওদের মধ্যে কিছু একটা হয়েছিল। ফলে বিশ্বজিৎ অবসাদে ভুগছিল। একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছে।” পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত কিছুটা সুস্থ হলেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
ছবি: সুজিত মণ্ডল
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.