সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: হাতির হানায় ফের প্রাণহানি। এবার মৃত্যু হল মা এবং তার শিশুকন্যার। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের সীমান্তবর্তী এলাকা ঝাড়খণ্ডের গোয়ালডিহা গ্রামে। তাঁদের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনায় বনদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাতির হানা রুখতে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় এমন কাণ্ড বলেই দাবি এলাকাবাসীর।
ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের সীমান্তবর্তী এলাকা ঝাড়খণ্ডের গোয়ালডিহা গ্রামের বাসিন্দা কল্যাণী শবর। বছরকয়েক আগে বিয়ে হয় তাঁর। বছর দেড়েকের কন্যাসন্তানও ছিল কল্যাণীর। মূলত জঙ্গল থেকে কাঠ সংগ্রহ করেই দিন কাটত ওই মহিলার। বাড়িতে শিশুকন্যা সামলানোর মতো কেউই নেই তাঁর। তাই সোমবার সকালে ছোট্ট মেয়ে কোলে নিয়ে জঙ্গলে কাঠ জোগাড় করতে গিয়েছিলেন কল্যাণী। তবে কাঠের খোঁজ করতে করতে আচমকাই হাতির সামনে চলে আসেন তিনি। ওই মহিলা এবং তাঁর শিশুকন্যাকে আছড়ে মারে দাঁতাল। ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় দু’জনের শরীর। এর আগে রবিবার মুরকাটি গ্রামেও হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। তাঁর শরীরও দাঁতাল ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল বলে বনদপ্তর সূত্রে খবর। হাতির হামলায় মৃতদের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, জামবনি এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সীমানা এলাকা ধরে জামবনির বিভিন্ন গ্রামে তিনটি হাতি যাতায়াত করছে। হাতিগুলি যথেষ্ট আক্রমণাত্মক বলে বনদপ্তরের দাবি। তাই বনকর্মীরা সাধারণ মানুষকে সাবধানে চলাফেরা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। গিধনির রেঞ্জার বাসিরুল আলম বলেন “ঝাড়খণ্ডের গোয়ালডিহায় হাতির হামলা মা এবং মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা আমরা খতিয়ে দেখছি। তিনটি হাতি ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” বনদপ্তরের দাবি, দিন যত যাচ্ছে ততই কমছে বনাঞ্চল। তাই খাবারের খোঁজ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বন্যপ্রাণীরা। সে কারণেই খাবারের খোঁজে বারবারই বনাঞ্চল থেকে লোকালয়ে চলে আসছে তারা। তাই হয়তো বারবার এমন কাণ্ড ঘটছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.