অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ। আর তা স্বাভাবিকভাবেই মানতে পারেননি যুবক। তরুণীকে চাপ দিয়েছিলেন নতুন পুরুষকে ভুলে সম্পর্ক রাখতে হবে তাঁর সঙ্গেই। জোরাজুরি অবশ্য মানতে পারেনি তরুণীও। এদিকে সম্পর্ক ক্রমশই তিক্ত হতে থাকে। সে কারণেই যৌনতার অছিলায় প্রেমিককে ডেকে গাছে বেঁধে যৌনাঙ্গ কেটে দেওয়ার মতো চরম সিদ্ধান্ত নেয় তরুণী। হাওড়ার ডোমজুড়ের পার্বতীপুরের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় নাকি একথাই জানিয়েছে ধৃত তরুণী। আর এই কাজ করার জন্য অনলাইনে ছুরিও কেনে সে।
শনিবার সন্ধ্যায় প্রেমিকা সুমাইয়া তার প্রেমিক কাইফের সঙ্গে দেখা করবে বলে পার্বতীপুর শেখপাড়ার বাঁশতলায় ডেকে পাঠায়। তার পরই এই কাণ্ড ঘটায় সুমাইয়া। গুরুতর আহত অবস্থায় সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ কাইফ বাড়ি ফেরে। প্রথমে বাড়িতে বাথরুমে যায়। তার পর রক্তাক্ত অবস্থায় নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ে। এর পর কাইফ তাঁর মা নার্গিস বেগমকে ডাকে। কাইফ তাঁর মা, বাবা-সহ পরিবারের অন্য সদস্য ও প্রতিবেশীদের ঘটনার কথা জানায়। সন্ধেতেই গুরুতর আহত কাইফকে প্রথমে ডোমজুড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। কাইফের মুখে ঘটনার কথা জেনে তাঁর পরিবার ডোমজুড় থানায় সুমাইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। অভিযোগ পেয়েই শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ সুমাইয়াকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
ডোমজুড়ের পার্বতীপুরেই একই পাড়াতে বাড়ি কাইফ ও সুমাইয়ার। কিন্তু কেন সুমাইয়া তার প্রেমিক কাইফের গোপনাঙ্গ কেটে দিল? কাইফ ও সুমাইয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে থেকেই দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাঝখানে দুজনের ব্রেক আপও হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় বর্ধমানের এক যুবকের প্রেমে পড়েন সুমাইয়া। কিন্তু কিছুদিন আগে আবার কাইফের সঙ্গে পুরনো ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক জোড়া লাগে। কাইফ-সুমাইয়ার মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তিকে নিয়ে ফের টানাপোড়েন শুরু হয়। আর তার জেরেই প্রেমিকের উপর রাগ থেকে প্রেমিকা এমন কাণ্ড ঘটায় বলে অনুমান স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের।
এই প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, ঠিক কী কারণে সুমাইয়া এই কাজ করেছে, এই ঘৃণ্য কাজ সে একাই করেছে নাকি আর কেউ ছিল কিংবা আর কারও মদত রয়েছে কিনা সবটাই সুমাইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। কাইফের মা নার্গিস বেগম বলেন, ‘‘এই ঘৃণ্য অপরাধের জন্য সুমাইয়াকে প্রশাসন কঠোর শাস্তি দিক।’’এদিকে সুমাইয়ার কাকা রেজাউল শেখ বলেন, ‘‘আমার ভাইঝিকে কাইফ অনেকদিন ধরেই প্রেম করার নামে নানাভাবে ব্ল্যাকমেল করছিল। তাই হয়তো ও সহ্য করতে না পেরে এ ধরনের কাজ করে ফেলেছে। তবে যে কাজটা সুমাইয়া করেছে তা অত্যন্ত ঘৃণ্য। এর জন্য ওর শাস্তি হওয়া উচিত।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.