শেখর চন্দ্র, আসানসোল: খনিকর্মী খুনের মাত্র ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার কিনারা করল পুলিশ। সুপারি কিলার দিয়ে স্বামীকে খুন করেছিল স্ত্রী-ই। পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামীর স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি একা ভোগের আশায় এই কাজ করেছিল বলেই জেরায় জানিয়েছে সে। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সোমবার আসানসোলের কুলটির শীতলপুরের তুলসি হিরে গ্রামের বাসিন্দা ইসিএল (ECL) কর্মী পরেশ মারান্ডি খুন হন। অজ্ঞাতপরিচয় বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। প্রথমেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নিহতের স্ত্রী মঙ্গলী মারান্ডিকে। তার কথাবার্তায় সন্দেহ হয় পুলিশের। তদন্তকারীদের দাবি, অবশেষে পুলিশি জেরায় স্বামীকে খুন করা হয়েছে বলেই স্বীকার করে নেয়। কেনই বা খুন করেছিল সে, তাও জানায় পুলিশকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিহতের স্ত্রী জানায় পরেশ মারান্ডি অত্যন্ত নেশা করতেন। প্রায়শই কর্মস্থলে যেতেন না। স্ত্রীর সঙ্গে তেমন সুসম্পর্কও ছিল না। তার ফলে টাকাপয়সার অভাব লেগেই থাকত মঙ্গলীর। সেই অভাব দূর করতেই চরম সিদ্ধান্ত নেয় সে। সুপারি কিলার দিয়ে স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করে। তাই ভিকি নুনিয়া ও সন্দীপ নুনিয়া নামে বিহারের দুই দুষ্কৃতীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। আগাম ২০ হাজার টাকাও দেয়। স্বামীকে খুনের পর আড়াই লক্ষ টাকা দুষ্কৃতীদের দেবে বলে জানায় মঙ্গলী। সেই অনুযায়ী পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে সন্দীপ আবার বিশাল পাসোয়ান নামে এক ভাড়াটে খুনির সঙ্গে যোগাযোগ করে। সে-ও বিহারেরই বাসিন্দা। পরেশকে খুন করতে গত সোমবার শীতলপুরের তুলসি হিরে গ্রামে আসে। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালিয়ে পরেশকে খুন করে।
কিন্তু কেন স্বামীকে সুপারি কিলার দিয়ে খুন করাল মঙ্গলী? পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলী ভেবেছিল, স্বামীর মৃত্যু হলে সমস্ত স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি একাই ভোগ করতে পারবে সে। আর সেই ভাবনাচিন্তা করেই স্বামীকে খুনের ছক কষে সে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মঙ্গলী-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র, একটি বাইক, একটি স্কুটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তবে সুপারি কিলার এখনও অধরা। তার খোঁজে চলছে জোর তল্লাশি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.