দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ফের বাঘরোল পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। এমনকী ওই নিহত বাঘরোলের সঙ্গেই চলল ফটোশুট। নির্মম এই ঘটনার সাক্ষী দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের কাশিপুর থানার গাজিপুর। কারা এই বাঘরোলের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত, তা খতিয়ে দেখছে বনদপ্তর।
গত কয়েকদিন ধরে এলাকায় বাঘরোলকে ঘুরতে দেখেন স্থানীয়রা। তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। তারপরই বৃহস্পতিবার সকালে লাউহাটি-ভাঙড় রোডের ধারে গাজিপুরের কাছে ওই বাঘরোলের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁরা দেখেন বাঘরোলটির মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। এদিন মৃত ওই বাঘরোলটি দীর্ঘক্ষণ রাস্তার ধারে পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা তাকে একটি মাইলফলকের উপরে তুলে সেলফি তোলে। পরে পুলিশ ও বনকর্মীরা বাঘরোলটিকে উদ্ধার করেন। বনদপ্তরের দাবি, পিটিয়ে মারা হয়েছে প্রাণীটিকে। বাঘরোলটি কোনওভাবে রাস্তা পার হওয়ার সময় গাড়ির ধাক্কায় জখম হয়ে মারা গিয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাঘরোলটিকে কারা পিটিয়ে খুন করল, তা প্রমাণ হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও কাশিপুর থানার চালতাবেড়িয়ার কচুয়াতে একটি বাঘরোলকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। তাছাড়া এলাকা থেকে কয়েকদিন আগেও একটি জখম বাঘরোলকে উদ্ধার করেছিল বনদপ্তর। পরে ওই বাঘরোলকে আলিপুর চিড়িয়াখানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্যের মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা বলেন, “কী কারণে বাঘরোলটির মৃত্যু হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
বনকর্মীরা জানান, বাঘরোলের সঙ্গে চিতাবাঘের গায়ের রঙের মিল রয়েছে। তাই অনেকেই চিতাবাঘ ভেবে ভুল করেন। বিরল প্রজাতির এই প্রাণীকে সাধারণত নদীবেষ্টিত বা জলাভূমি এলাকায় দেখা যায়। সুন্দরবনের ঝড়খালি, ক্যানিং, ভাঙড়-সহ মালদহ, মুর্শিদাবাদ এমনকি ওড়িশা, নেপালেও এই প্রাণীকে দেখা যায়। বাঘরোল সাধারণত মানুষের কোনও ক্ষতি করে না। শান্ত স্বভাবের এই বন্যপ্রাণীটি মাছ বা হাঁস, মুরগি ধরে খায়। বনদপ্তর সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, মানুষের সচেতনতার অভাবে অনেকেই শান্ত স্বভাবের বিরল প্রজাতির এই প্রাণীটিকে মেরে ফেলছে। এবিষয়ে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের সচেতন করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
ছবি: বিশ্বজিৎ নস্কর
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.