দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: দিব্যি পিঠ টিপে দিচ্ছেন এক ব্যক্তি। যাঁর পিঠ টেপা হচ্ছে, তিনি দিব্যি আরামে কাজ করছেন। নাহ! একথা শুনে কোনও ম্যাসাজ পার্লারের কথা বলা হচ্ছে তা ভাবার প্রয়োজন নেই। কারণ, এ দৃশ্য আদতে হুগলির কোন্নগর পুরসভার। যিনি আরাম করে পিঠ টেপাচ্ছেন তিনি এই পুরসভার জলকল বিভাগে কর্মরত তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা অলোক মুখোপাধ্যায় ওরফে নাড়ু। তাঁর এই ভিডিওই আপাতত নেটদুনিয়ায় ভাইরাল। যা দেখে রীতিমতো সমালোচনায় সরব বিরোধীরা।
কোন্নগর পুরসভার জলকল বিভাগে কর্মরত তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা অলোক মুখোপাধ্যায় ওরফে নাড়ুর ওই ভাইরাল ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় হটকেক। মিনিট দুয়েকের ওই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, একজন বয়স্ক পুরকর্মী তাঁর পিঠ টিপে দিচ্ছেন। আর ওই তৃণমূল নেতা দিব্যি কাজ করেই চলেছেন। কোন্নগর পুরসভার ভিতরে কর্তব্যরত অবস্থায় কীভাবে একজন বয়স্ক মানুষকে দিয়ে এমন কাজ করাতে পারলেন ওই তৃণমূল নেতা, সেই প্রশ্নও উঠেছে ইতিমধ্যেই। অলোক মুখোপাধ্যায় কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়ের চেয়ারম্যান। সেই সুবাদে অলোক ক্ষমতার জোরে নানা ধরনের কাজ করতে পুরকর্মীদের বাধ্য করেন বলেও অভিযোগ অনেকের।
যদিও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এক্কেবারে নস্যাৎ করে দিয়েছেন অলোক। আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি বলেন, “পুজোয় সবাই যখন ছুটি পেয়েছে তখন আমি একটানা কাজ করে গিয়েছি। কিন্তু আমার একটানা কাজে সমস্যা হয়। কারণ, কয়েকদিন আগে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ায় আমার হাঁটু ও কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা। তাই লাগাতার কাজ করলে আমার পিঠে যন্ত্রণা হয়। যিনি আমার পিঠ টিপে দিয়েছেন তিনি সিনিয়র পাওয়ার লিফটার। ফিজিওথেরাপিও করান। তাই আমার পিঠের ম্যাসাজ করে দিয়েছেন তিনি। তাঁকে আমি কোনওভাবে জোর করিনি। আমাদের কোনও সহকর্মী ভিডিও তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন। এর বাইরে আর কিছুই নয়।”
এই ভিডিওকে হাতিয়ার করে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে বিজেপি। শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শ্যামল ঘোষ এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, কোন্নগর পুরসভায় নানা অসাধু কাজ লেগেই থাকে। এই যেমন কয়েক বছর আগে বিশ্রামিকা গেস্ট হাউসে মধুচক্রের আসরের পর্দাফাঁস হয়। আবার সেই পুরসভাতেই জলকল অফিসের ভিতরে প্রবীণ পুরকর্মীকে দিয়ে ম্যাসাজ করানোর ঘটনা সামনে এল। এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। কোন্নগরের মানুষ তৃণমূল নেতানেত্রীদের এধরনের কাজে বীতশ্রদ্ধ।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.