বিক্রম রায়, কোচবিহার: বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের সংকল্প যাত্রায় বাধা ঘিরে ধুন্ধুমার। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের পাতলাখাওয়া পুন্ডিবাড়ি এলাকার ঘটনা। অভিযোগ, সাংসদের মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে তৃণমূল। এরপরই মারমুখী হয়ে ওঠেন বিজেপি কর্মীরা। ভাঙচুর চলে তৃণমূল কার্যালয়ে। ওই সময় এক তৃণমূল যুব নেতার মৃত্যু ঘিরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গেরুয়া বাইক বাহিনীর কর্মীরা ওই যুব নেতাকে পিটিয়ে মেরেছে বলে দাবি তৃণমূলের। যদিও মৃতের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি। অন্যদিকে বিজেপি সাংসদ পালটা দাবি করেন, হামলার কোনও ঘটনা ঘটেনি। পুরো ঘটনা তৃণমূলের সাজানো।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত তৃণমূল যুব নেতার নাম মজিরুদ্দিন সরকার।
কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আক্তার বলেন, “মজিরুদ্দিনের কীভাবে মৃত্যু হয়েছে সেটা জানতে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। মারধরের অভিযোগ মিলেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও বোমাবাজির অভিযোগ নিয়েও পৃথকভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে।” এদিন ছিল বিজেপি সাংসদের সংকল্প যাত্রা। ওই কর্মসূচিকে ঘিরে আচমকা ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাতলাখাওয়া পুন্ডিবাড়ি এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন অভিযোগ করেন, সংকল্প যাত্রার নামে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। গান্ধী শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন। তাঁর নামে মিছিল করে সন্ত্রাস চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, “পুন্ডিবাড়ি শুটিং ক্যাম্প এলাকায় পদযাত্রা থেকে এক তৃণমূল কর্মীকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। দলের তিনটি কার্যালয়ে বোমাবাজি করে ভাঙচুর চলে। বিজেপি কর্মীদের হামলায় জখম হয়েছেন কয়েকজন তৃণমূল কর্মী।”
মৃত মজিরুদ্দিন সরকার উত্তর কালারের কুঠি এলাকার যুব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ছিলেন। তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ করলেও দাদা আনোয়ার হোসেন দাবি করেন, “মিছিলকে কালো পতাকা দেখানোর জন্য ভাই দাঁড়িয়েছিল। ওই সময় বাইক বাহিনী তাঁকে ভয় দেখায়। সেই আতঙ্কে ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। তাকে কেউ মারধর করেনি।” অন্যদিকে সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও তৃণমূলের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি পালটা অভিযোগ করেন, পাতলাখাওয়া এলাকায় তাঁদের মিছিল আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে তৃণমূল। পুলিশ ও তৃণমূল কর্মীরা যৌথভাবে মিছিল আটকানোর চেষ্টা করলেও বিজেপি কর্মীদের সংখ্যা এতটাই বেশি ছিল যে ভয়ে ওরা পালিয়ে যায়। এরপর নিজেদের পার্টি অফিস নিজেরাই ভেঙে বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুর সঙ্গে বিজেপির অথবা পদযাত্রার কোনও সম্পর্ক নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.