ছবি: প্রতীকী।
মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: লকডাউনের জেরে বন্ধ গণপরিবহন। আয়োজন করা যাচ্ছে না রক্তদান শিবিরের। তাই সময়মতো রক্ত না পেয়ে মৃত্যু হয় থ্যালাসেমিয়া (Thelesemia) আক্রান্ত এক তরুনীর। উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ঘটনা।
প্রয়োজন ছিল শুধু এক বোতল “O” পজিটিভ গ্রুপের রক্তের। সময় মতো তা না পেয়েই করুণ পরিণতি হল এক তরুণীর। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন উলুবেড়িয়ার বাড়বেড়িয়ার নিশা ডাল। দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন এই তরুণী। প্রতি মাসেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে রক্ত দিতে হত বলে জানান তাঁর প্রতিবেশীরা। জানা যায়, ছোটবেলা থেকে এই মারণ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন নিশা। প্রতি মাসেই নিশাকে উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে নিশা রক্ত দিতে হত। মায়ের মৃত্যুর পর বাবা মেয়ের সংসারে একমাত্র বাবাই তাঁর জীবনের জিয়নকাঠি হয়ে ওঠে। পেশায় গাড়ি চালক নিমাই ডালকে পেশার টানে বারবারই কলকাতায় ছুটে যেতে হত। ভাগ্যের পরিহাসে লকডাউনের জেরে সেই কলকাতাতেই আটকে পড়েন নিমাই ডাল। এরই মাঝে বুধবার রাতে হঠাৎ নিশা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার প্রতিবেশীরাই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা নিশার প্রতিবেশীদের “O” পজিটিভ গ্রুপের আনতে বলেন। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও রক্ত পাওয়া যায়নি। ডোনার জোগাড়ের চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। এদিকে পরিস্থিতি অবনতি হতে শুরু করলে বুধবার রাতে আটটা নাগাদ মৃত্যু হয় নিশার। উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার সুদীপ কাড়ার বলেন, “দুঃখজনক ঘটনা। নানা কারনে রক্তদান শিবির বন্ধ রয়েছে। ফলে রক্তের জোগান কম আছে। সব সময় সব গ্রুপের রক্ত পাওয়া যায়না।” তবে সুদীপবাবুর আক্ষেপ, “যদি তরুণীর পরিবারের লোকজন আমাকে বিষয়টা জানাতেন। তাহলে আমি অন্যত্র চেষ্টা করে দেখতাম।”
প্রসঙ্গত, হাওড়া গ্রামীন এলাকার বেশ কিছু যুবক লকডাউনে রক্তের সঙ্কট মেটাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রুপ করেছে। তাঁরাই বিভিন্ন সময়ই লোকেদের রক্তের চাহিদা মিটিয়ে এসেছে। এই ঘটনা সামনে আসায় তাঁদের বক্তব্য, “উলুবেড়িয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের ব্লাড ব্যাংকের মজুত রক্তের তালিকা নিয়মিত প্রকাশ করুক। তাহলে ব্লাড ব্যাংকে রক্তের জোগান সম্পর্কেও জানা যায়। আমরাও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারব। ফলে অকালে আরা কাউকে মত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.