অঙ্কন: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে করোনা আক্রান্তের নাম, ঠিকানা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে গ্রেপ্তার এক শিক্ষিকা। ধৃত হুগলির কোন্নগরের বাসিন্দাকে আদালত তিনদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। ওই আক্রান্ত ব্যক্তি একজন চিকিৎসক। তাই তাঁর নাম, ঠিকানা এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এলাকার অন্যান্য বাসিন্দারা। তাঁদেরই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষিকাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে হুগলির এক চিকিৎসক করোনা উপসর্গ নিয়ে ভরতি হন একটি হাসপাতালে। পরেরদিনই তাঁর নাম, ঠিকানা-সহ তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন শ্রীরামপুরের এক বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা অবন্তী মিত্র। কিন্তু সরকারের তরফে কড়া নির্দেশ রয়েছে, করোনা সন্দেহে হাসপাতালে ভরতি হওয়া কিংবা আক্রান্ত অথবা সুস্থ হয়ে ফিরে আসা কোনও ব্যক্তির নাম, পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না। কারণ, অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে যে এই সংক্রমণ ছোঁয়াচে হওয়ায় তাঁদের নানা সামাজিক বাধাবিঘ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। এমনকী সুস্থ হওয়ার পরও কেউ কেউ নিজের বাড়িতে ফিরলেও, প্রতিবেশীদের সন্দেহের নজরে পড়ছেন। তাই তাঁদের নিরাপত্তার স্বার্থে নাম, পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না।
কিন্তু একজন শিক্ষিকা হয়েও এ বিষয়ে এতটুকুও সচেতন হননি অবন্তী মিত্র। তাই তিনি এলাকার চিকিৎসককে ‘করোনা আক্রান্ত’ বলে এভাবে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। সেইসঙ্গে কিছুটা কটাক্ষও করেছেন তিনি। তবে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দা চিকিৎসক এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এলাকায় যাননি। তিনি নিজের কাজের জন্য হাওড়া জেলায় ছিলেন। কিন্তু আচমকাই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি হন।
এহেন ব্যক্তিকে নিয়ে শিক্ষিকার পোস্টটি নিমেষে ছড়িয়ে পড়ায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন চিকিৎসকের সহকর্মী এবং অন্যান্য বাসিন্দারা। তাঁরাও পালটা এই শিক্ষিকার নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁদেরই একাংশ উত্তরপাড়া থানায় অবন্তী মিত্রর নামে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেপ্তার করে। লকডাউনের মাঝেও শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতের বিশেষ এজলাসে তাঁকে তোলা হয়। বিচারক তিনদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। সাজা পেয়ে অবশ্য শিক্ষিকার সাফাই, তিনি না বুঝে ভুল করে ফেলেছেন। ওভাবে পোস্ট করা উচিৎ হয়নি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, একজন শিক্ষিকাই যদি এভাবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.