সোমনাথ পাল, বনগাঁ: পড়াতে গিয়ে ছাত্রী ও তাঁর মাকে ধর্ষন৷ শুধু ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হননি অভিযুক্ত শিক্ষক৷ কুকীর্তির জানাজানি হতে না দেওয়ার জন্য ধর্ষণের ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়৷ ঘটনায় অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা বছর পঁয়ত্রিশের গৃহবধূ ও তাঁর নাবালিকা কন্যা৷ তবে বৃহস্পতিবার আদালতে গিয়ে অবাক ঘটনার সাক্ষী হন তাঁরা৷ দেখেন লকআপের বাইরে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযুক্ত শিক্ষক সাবির আলি৷ এরপরেই জেলারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হন আইনজীবীরা৷
[পর্ষদের পাঠ্যবইয়ে নতুন করে লিখতে হবে স্বপ্নার কাহিনি]
জানা গিয়েছে, বৈরামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাবির আলি ওই পরিবারের মেয়েটির গৃহশিক্ষক ছিলেন৷ ঘটনার দিন রাতে পড়াতে এসে সে প্রথমে ধর্ষণ করে ছাত্রীর মাকে৷ ঘটনার কথা জানাজানি হলে সোশাল মিডিয়ায় ধর্ষণের ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়৷ এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তারপরও বিন্দুমাত্র কমেনি অত্যাচারের মাত্রা। ওই একইভাবে ভয় দেখিয়ে বাড়িতে ঢুকে মায়ের পর মেয়ে তথা ছাত্রীকেও ধর্ষণ করে ওই শিক্ষক। এমনকি বলপূর্বক গ্রাম্য সালিশি সভাতে নির্যাতিতার পরিবারকে টাকা নিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলে সে।
এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হয় পরিবারটি৷ অভিযোগ পাওয়ার পরই তৎপর হয় পুলিশ৷ গ্রেপ্তার করে অভিযুক্তকে তুলে দেওয়া হয় আদালতে। ধৃতের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পকসো আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। ধৃতকে আদালতে তুলে পাঁচদিনের হেফাজতে নেয় পুলিশ। চলতি মাসের ২৮ তারিখ নির্যাতিতা গৃহবধূর অভিযোগ থেকে বনগাঁ আদালতে জামিন পায় অভিযুক্ত। তবে, পকসো মামলায় নিস্তার মেলেনি তার৷ এরইমধ্যে সন্দেহজনক ভাবে শুধুমাত্র একটি অভিযোগে জামিনের কাগজপত্র দেখে বনগাঁ জেল থেকে অভিযুক্তকে মুক্ত করে দেয় জেলার নীলকন্ঠ মুখোপাধ্যায়।
[প্রতিবন্ধকতার তোয়াক্কা না করে দেহদানের অঙ্গীকার প্রৌঢ়ের]
বৃহস্পতিবার পকসো মামলার শুনানি জন্য সকাল এগারোটায় আদালতে পৌঁছায় সবপক্ষ। অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করতে গিয়েই বাঁধে বিপত্তি। দেখা যায় কোর্ট লকআপের বাইরে দিব্যি আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযুক্ত সাবির আলি। এই ঘটনা আদালত চত্ত্বরে ছড়িয়ে পড়তেই জেলারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আইনজীবীরা। এই ঘটনায় জেলারের অপসারণ চেয়ে জেলের সম্মুখে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখান আদালতের তাঁরা। আইনজীবী সংগঠনের সম্পাদক সমীর দাস অভিযোগ করেন, মোটা টাকার বিনিময়ে অভিযুক্তের রিলিজ অর্ডার ছাড়া অভিযুক্তকে ছেড়ে দিয়েছেন জেলার। এদিন বিকেল পর্যন্ত বিচারক এই মামলায় কোনও আদেশ দেননি বলে জানা যায় আদালত সূত্রে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.