Advertisement
Advertisement
চিতাবাঘ

হামলার পরেও লাঠি হাতে চিতাবাঘের সঙ্গে লড়াই, হাসপাতালে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ চা শ্রমিক

জখম কুমারের সাহসিকতার প্রশংসা করছেন সকলেই।

A tea garden worker attacked by leopard in Saili tea garden
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 24, 2020 1:47 pm
  • Updated:January 24, 2020 3:08 pm  

অরূপ বসাক, মালবাজার: গরু চড়াতে গিয়ে চিতাবাঘ হামলার শিকার এক যুবক। কামড়-আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছে শরীর। তবে তাতেও হার মানেননি তিনি। পরিবর্তে লাঠি হাতে চিতাবাঘের সঙ্গে লড়াই করলেন সাইলি চা বাগানের শ্রমিক কুমার ওঁরাও। আপাতত গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে প্রাণরক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ওই চা শ্রমিকের সাহসিকতার প্রশংসা করছেন প্রায় সকলেই।

প্রতিদিনের মতো বিকেলে মাল ব্লকের সাইলি চা বাগান লাগোয়া একটি মাঠে গরু চড়াচ্ছিলেন শ্রমিক কুমার ওঁরাও। তখনও তিনি বোঝেননি ঝোপের পাশে ওত পেতে বসে রয়েছে বিপদ। আচমকা কিছু বুঝে ওঠার আগেই যেন গায়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কেউ। মুহূর্তের মধ্যে আঁচড়ে-কামড়ে প্রায় রক্তে ভেসে যেতে থাকে তাঁর গোটা শরীর। মাথায়, চোখে ততক্ষণে কামড়ও দিয়েছে অজানা আতঙ্ক। যুবক বুঝতে পারেন চিতাবাঘের হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। হাত-পা ছুঁড়েছেন বাঁচার তাগিদে। তবে তাতেও চিতাবাঘ নাছোড়বান্দা। কোনওভাবে শিকারকে কবলমুক্ত করবে না সে।

Advertisement

তবে তাতেও হাল ছাড়েননি চা বাগান শ্রমিক। গরু তাড়ানোর লাঠি দিয়ে চিতাবাঘের সঙ্গে প্রাণ বাঁচানোর লড়াই শুরু করেন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে লড়াই। চিতাবাঘ-মানুষের দ্বৈরথে কেউই যেন হারতে নারাজ। তবে একদিকে আহত চা শ্রমিকের করুণ আর্তি এবং একের পর এক লাঠির ঘা, জোড়া ফলায় ততক্ষণে অবশ্য বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছে চিতাবাঘ। জখম ব্যক্তিকে ছেড়ে পালিয়ে যায় চিতাবাঘ। জড়ো হয়ে যান স্থানীয়রা। রক্তাক্ত অবস্থায় মাঠেই লুটিয়ে পড়েন কুমার। এলাকাবাসী তাঁকে উদ্ধার করে মাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই আপাতত চিকিৎসা চলছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’র।

[আরও পড়ুন: ‘রাজ্যে NRC হচ্ছে না, কারও নাম বাদ যাবে না’, দাবি বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের]

চিতাবাঘের উপদ্রবে দিনকয়েক ধরে ত্রস্ত চা বাগান। কারও বাড়ির পোষ্য আবার কখনও সাধারণ মানুষের উপর হামলা করছিল চিতাবাঘ। তার জেরে আতঙ্কে দু’চোখের পাতা এক করতে পারছিলেন না চা শ্রমিকরা। গত ১৭ ডিসেম্বর আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটের গ্যারগেণ্ডা চা বাগানে এক তরুণীর উপর হামলা চালায় চিতাবাঘ। মারাও যান তিনি। বনদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্থানীয়রা। এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসে বনদপ্তর। চিতাবাঘের খোঁজে শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি। মাদারিহাটের তুলসিপাড়া, গ্যারগেণ্ডা, রামঝোড়া, ধুমচিপাড়া চা বাগানে পাতা হয় ৯টি খাঁচা। তবে তাতেও প্রায় দেড় মাস ধরে পালিয়ে পালিয়ে বাঁচছিল ওই চিতাবাঘটি। গত ১৩ জানুয়ারি গ্যারগেণ্ডা চা বাগানের চার নম্বর সেকশনে বনদপ্তরের পাতা খাঁচায় ধরা দেয় চিতাবাঘটি। তবে সাইলি চা বাগানে এখনও ধরা পড়েনি চিতাবাঘটি। পরিবর্তে চিতাবাঘের হামলায় প্রায় প্রাণ হারাতে বসেছিলেন চা শ্রমিক। জখম কুমারের সাহসিকতার প্রশংসা করছেন সকলেই। দ্রুত সুস্থতাও কামনা করছেন তাঁর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement