সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: হস্টেলের শৌচালয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী৷ ৮০ শতাংশ দগ্ধ হয়ে তিনি এখন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন৷ চিকিৎসকরা তাঁর প্রাণ বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বলে খবর৷ মেডিক্যাল বোর্ডে আলোচনার মাধ্যমে তাঁর চিকিৎসা পদ্ধতি ঠিক করা হয়েছে৷
বিশ্ববিদ্যালয়ে সূত্রে খবর, শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা হস্টেল থেকে আচমকাই চেঁচামেচি শুনতে পান নিরাপত্তারক্ষীরা৷ হস্টেলের কাছে গিয়ে তাঁরা দেখেন, দোতলা থেকে কালো ধোঁয়া বেরচ্ছে৷ ধোঁয়ার উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, তা একটি ঘর লাগোয়া শৌচালয়৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের দোতলার ওই ঘরে থাকেন গণিতে স্নাতকোত্তরের ছাত্রী লিপিকা রায়৷ তিনি কোচবিহারের বাসিন্দা, এমএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী৷ তাঁর ঘরের দরজায় ধাক্কা দিয়ে কোনও সাড়া পাওয়ায়, নিরাপত্তারক্ষী এবং হস্টেলের অন্যান্য বাসিন্দারা দরজাটি ভেঙে ফেলেন৷ ভিতরে ঢুকে শৌচাগারের দরজা খুলে দেখা যায়, লিপিকা দগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন৷ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ কিন্তু ততক্ষণে তাঁর শরীরের ৮০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা৷ পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন লিপিকা৷
কিন্তু কী কারণে এমন একটি ঘটনা ঘটল, সে সম্পর্কে না লিপিকার রুমমেট, না সহপাঠী – কেউই কোনও সূত্র দিতে পারছেন না৷ এমনকী এবিষয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও৷ কোচবিহারের লিপিকা গণিত নিয়ে স্নাতকোত্তরে ভরতি হয়েছিলেন৷ শান্ত স্বভাবের ছাত্রীটি ঠিকমতো ক্লাসও করছিলেন৷ তবে সম্প্রতি তাঁর মধ্যে কোনও মানসিক অবসাদ বাসা বেঁধেছিল কি না, তা কারও জানা নেই৷ এদিন যে সময় তিনি এই ঘটনা ঘটান, সেসময় হস্টেলে কেউ ছিল না৷ সকলেই যে যার ক্লাস করতে বেরিয়ে গিয়েছিল৷
এখানেই দানা বাঁধছে বেশ কিছু প্রশ্ন৷ তাহলে কি ইচ্ছা করেই আজ ক্লাসে যাননি লিপিকা? একলা থাকার সুযোগে পরিকল্পনা করেই কি আত্মহত্যার চেষ্টা? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ৷ তবে লিপিকার জবানবন্দি না পেলে, তাঁদের পক্ষেও এই রহস্যভেদ সম্ভব নয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর৷ এমন মর্মান্তিক ঘটনার খবর দেওয়া হয়েছে কোচবিহারে, লিপিকার বাড়িতে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.