শেখর চন্দ, আসানসোল: স্কুলের সরস্বতী পুজো (Saraswati Puja)। এবার সেই পুজো হবে স্কুলেরই ছাত্রের গড়া মূর্তিতে। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসানসোলের নরসোমুদা জনকল্যাণ হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। এবার স্কুলেরই অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শংকর ধীবরের শিল্পসত্ত্বাকে স্বীকৃতি দিতে চলেছে স্কুল।
আসানসোলের নরসোমুদা জনকল্যাণ হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শংকর ধীবর নিজের খেয়ালেই মূর্তি গড়ে। স্কুলের প্রোজেক্টের প্রথম আঁকিবুকি নজর কাড়ে শিক্ষকদের। বিশেষ করে স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষক সৈকত চট্টরাজ বিষয়টি প্রথম লক্ষ্য করেন। তার কাছে জানতে চান ঠাকুর সে গড়তে পারে কিনা। শংকর জানায়, গত দু’বছর ধরে সে ছোটখাটো ঠাকুর গড়ছে। এরপর প্রধান শিক্ষক দীপক মুখোপাধ্যায়ের সম্মতি আদায় করে ওই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রকে সরস্বতী প্রতিমার বরাত দেওয়া হয়। শুধু তাই না হাই স্কুলের পাশেই রয়েছে নরসোমুদা প্রাইমারি স্কুল। ওই স্কুলেও পড়াশোনা করেছে শংকর। ওই প্রাইমারি স্কুল থেকেও প্রাক্তন ছাত্র শংকরকে সরস্বতী ঠাকুর তৈরির বরাত দেওয়া হয়। প্রাইমারি স্কুলের জন্য সাড়ে তিন ফুটের এবং হাই স্কুলের জন্য ৫ ফুটের মূর্তি গড়েছে ওই অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। প্রতিমার শাড়ি অলংকার মাটির। সঙ্গে রয়েছে ডাকের সাজ। কাঠ খড় চটের বস্তা দিয়ে তৈরি হয়েছে কাঠাম।
জানা গিয়েছে, তিন সপ্তাহের মতো সময় লেগেছে মূর্তি তৈরি করতে। স্কুল, টিউশন পঠন পাঠনের মাঝেই জোর কদমে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। শংকরের বাবা নব ধীবর মাছ বিক্রেতা। মা জয়া ধীবর গৃহবধূ। শংকরের এক দিদি রয়েছে। সে কলেজ ছাত্রী। বাড়িতে অভাব রয়েছে। কিন্তু শিল্প-কর্মের প্রতি রয়েছে অগাধ ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার টানে এবার একসঙ্গে সাত থেকে দশটি মূর্তি গড়ার কাজ শুরু করেছে কিশোর। যার মধ্যে রয়েছে প্রথমবার স্কুলের সরস্বতী তৈরির বরাত। এবার সরস্বতী প্রতিমা বিদ্যালয়ের ছাত্রের তৈরি হাতেই পুজো হচ্ছে জেনে আনন্দিত সবাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক মুখোপাধ্যায় জানান, পড়ুয়ার শিল্পসত্ত্বা ও সৃজনশীলতাকে স্বীকৃতি দিতেই ওর উপর ভরসা রেখে এই বরাত দেওয়া হয়েছে। প্রতিমা যেভাবে তৈরি হয়েছে তাতে তাঁরা সন্তুষ্ট। আগামিদিনে শংকরকে আরও অনেক বড় কাজের বরাত দেওয়া হবে স্কুলের পক্ষ থেকে। স্কুলের স্কুলের সৌন্দর্যায়নে বাউন্ডারিতে বিভিন্ন মনীষীদের ছবি ও বাণী লিখে সাজানো হবে শংকর ধীবরের হাত দিয়েই বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.