ছবি: প্রতীকী।
শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বোনের বান্ধবীদের সঙ্গে মেলামেশা নিয়ে চরম আপত্তি ছিল দাদার। আপত্তিতে গুরুত্ব না শোনায় বোন রিয়া ঠাকুরকে (১৮) নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ দাদার বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন দেবনগর এলাকায় ঘটেছে হাড়হিম করা এই ঘটনাটি। অভিযুক্ত রাহুল ঠাকুরকে (২১) গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে জলপাইগুড়ি আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। আদালত সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
চলতি বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল সেন্ট্রাল গার্লস স্কুলের ছাত্রী রিয়া ঠাকুর। বাবা নিরঞ্জন ঠাকুর জানান, মেয়ের পাড়ায় সেই অর্থে কোনও বান্ধবী ছিল না। স্কুলের দু’একজনের সঙ্গে মেলামেশা করত। তাতেও আপত্তি ছিল ছেলে রাহুলের। পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ার পর স্কুলের বান্ধবীরা বাড়িতে আসা নিয়ে ভাই-বোনের মধ্যে দু’দিন ধরে কথা কাটাকাটি চলছিল। বুধবার বিকেলে এক বান্ধবীর বাড়িতে গিয়েছিল রিয়া। মা মৌমিতা ঠাকুর জানান, সাড়ে সাতটা নাগাদ মেয়ে বাড়ি ফেরে। রাতে ছেলে বাড়ি ফিরে বোনের উপর চোটপাট শুরু করে। এই নিয়ে ভাইবোনের মধ্যে চরম বচসা শুরু হয়।
এলাকায় একটি ওষুধের দোকান রয়েছে বাবা নিরঞ্জন ঠাকুরের। জানান, রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ বাড়ি ফিরে ভাইবোনের ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করেন। তার মধ্যেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। বোনকে ধাক্কা মেরে মেঝেতে ফেলে দিয়ে পকেট থেকে ছুরি বের করে বুকে, পিঠে নৃশংসভাবে কোপাতে থাকে রাহুল। ছেলেকে ছাড়াতে গিয়ে আহত হন বাবা, মা। তাঁদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। রিয়াকে উদ্ধার করে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তার। পরে পুলিশ বাড়ি থেকেই রাহুলকে গ্রেপ্তার করে।
মা মৌমিতা ঠাকুর জানান, বোনকে সবসময় সন্দেহ করতো রাহুল। বান্ধবীদের সঙ্গে মেলামেশা নিয়ে ওর আপত্তি ছিল। এই নিয়ে ভাইবোনের বচসা লেগেই থাকতো। সম্প্রতি ছেলে অসৎ সঙ্গে জড়িয়ে ছিল বলে সন্দেহ পরিবারের। বাবা নিরঞ্জন ঠাকুরের সন্দেহ, ছেলে হয়তো নেশাও করতো। তবে পকেটে যে ছুরি রাখতো এই নিয়ে সতর্ক করেছিল মেয়ে। জানান, মেয়ের কথায় গুরুত্ব দিয়ে আগে থেকে সতর্ক হলে হয়তো এই ঘটনার মুখোমুখি হতে হতো না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.