রাজা দাস, বালুরঘাট: সময় এগিয়েছে। সমাজ বদলাচ্ছে। কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গি কি বদলেছে আমাদের? সকলের যে ভাবনাচিন্তায় বদল এসেছে তা হলফ করে বলা যায় না। তাই তো আজও রূপান্তরকামীদের বাঁকা চোখে দেখা হয়। তাঁরা অনেকেই উপহাসের শিকার হন। বিভিন্ন সময়ে অপ্রস্তুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় রূপান্তরকামীদের। বিশেষত অসুস্থ হলে তাঁদের মহিলা না পুরুষ ওয়ার্ডে রাখা হবে, তা ঠিক করতেই সময় লেগে যায় বিস্তর। এই সমস্যা মেটাতে নজির গড়ে প্রথমবার সরকারি হাসপাতালে রূপান্তরকামীদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ড চালু হল। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিকল্পনায় বালুরঘাট সদর হাসপাতালের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রূপান্তরকামীরা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট সদর হাসপাতালের পুরনো ভবনে রূপান্তরকামীদের জন্য একটি পৃথক ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। সেখানে এই মূহূর্তে চারটি শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। অন্যান্য ওয়ার্ডের মতো উদ্বোধন হওয়া সেই বিশেষ ওয়ার্ডেও রয়েছে সমস্ত ব্যবস্থাপনা। মঙ্গলবার পৃথক ওয়ার্ডের উদ্বোধন করেন রূপান্তরকামী বনি রায়।এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বালুরঘাট সদর হাসপাতাল সুপার তপন বিশ্বাস, বালুরঘাট জেলা আদালতের বিচারক শুভ্রসোম ঘোষাল, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে।
বালুরঘাট সদর হাসপাতালের সুপার তপন বিশ্বাস বলেন, “সমাজ এগোলেও রূপান্তরকামীরা এখনও উপহাসের শিকার। তাঁদের বাঁকা চোখে দেখেন অনেকেই। তাই এই বিশেষ ওয়ার্ড খোলার ভীষণ প্রয়োজন ছিল। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এই বিশেষ ওয়ার্ড চালুর প্রধান উদ্যোক্তা।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, “জেলাতে এই মুহূর্তে অন্তত ৩০০ জন রূপান্তরকামী রয়েছেন। চিকিৎসার সময় তাঁদের পুরুষ নাকি মহিলা বিভাগে রাখা হবে তা নিয়ে সমস্যা হত। এই ধরনের ওয়ার্ড চালু করে পৃথকভাবে রূপান্তরকামীদের চিকিৎসা করা যায় কিনা তা আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়। আমি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলি। শেষে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন চিকিৎসা করাতে এসে অন্তত উপহাসের শিকার হতে হবে না তাঁদের। রূপান্তরকামীদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ড খুলে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারায় ভীষণ খুশি আমরা।” উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন রূপান্তরকামীরাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.