ছবি: প্রতীকী
শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে বিষধর সাপের কামড়ে গুরুতর অসুস্থ এক পরিযায়ী শ্রমিক। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের ঘটনা। বিশ্বজিৎ খাঁড়া নামে ওই পরিযায়ী শ্রমিক বর্তমানে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ খাঁড়া। নিজের জায়গায় বিশেষ অর্থ উপার্জন হচ্ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে মুম্বইয়ে সোনার কাজ করতে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর দাদা অভিজিৎও গিয়েছিলেন। লকডাউনে বেশ কয়েকদিন মুম্বইয়ে আটকেও পড়েন দুই ভাই। দিনদশেক আগে মুম্বই থেকে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে নিজের জেলায় ফেরেন তাঁরা। দাসপুরের যদুপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছিল তাঁদের। বুধবার রাতে মশারি টাঙিয়ে ওই স্কুলের এক ঘরের মেঝেতে শুয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। ঘুমন্ত অবস্থায় একটি সাপ তাঁকে কামড়ে দেয়।
ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। চিৎকার করতে থাকেন। তাঁর চিৎকারে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা বাকি সকলের ঘুম ভেঙে যায়। তড়িঘড়ি বিশ্বজিৎকে উদ্ধার করে দাসপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে তাঁর। ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা অন্যান্যদের দাবি, অত্যন্ত বিষধর কালাচ সাপই কামড়েছে বিশ্বজিৎকে। এ প্রসঙ্গে দাসপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও বিকাশ নস্কর বলেন, “রোগী ভাল রয়েছেন। কীভাবে সাপ ওই স্কুলে ঢুকল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
বিশ্বজিতের পরিবারের অভিযোগ, এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে গত কয়েকদিন ধরে বেশ কয়েকজন রয়েছেন। তবে তা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যদপ্তরের কেউই তাঁদের খোঁজখবর নেননি। এমনকী সাপে কামড়ানোর খবর পাওয়ার পরেও অসুস্থ বিশ্বজিৎকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সও মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে পরিজন এবং প্রতিবেশীদের উদ্যোগে গাড়ির বন্দোবস্ত করেই বিশ্বজিৎকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় গ্রামে ফিরেও বাড়ি যেতে পারছেন না পরিযায়ী শ্রমিকরা। তাই বাধ্য হয়ে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। কিন্তু কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলির দিকে কেন নজর দিচ্ছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা, সেই প্রশ্নই তুলছেন দাসপুরের বহু মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.