সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: নদী চুরি! আস্ত নদীকেই গায়েব করে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক বেসরকারি কারখানার বিরুদ্ধে। বৃষ্টির জল নিকাশির অন্যতম মাধ্যম এই নদী চুরি যাওয়ার এবার বর্ষায় দুর্গাপুর শহর জলে ডোবার আশঙ্কা। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে আসানসোল দুর্গাপুর কর্তৃপক্ষ(এডিডিএ)।
শিল্পশহর দুর্গাপুরে কল-কারখানার অভাব নেই। শহরের রাতুরিয়া অঞ্চলে এক কারখানার পিছনে রয়েছে একটি জলাশয়। খোদ স্থানীয় কাউন্সিলর আলো সাঁতরার অভিযোগ, ছাই ও মাটি দিয়ে জলাশয়টি ভরাট করার চেষ্টা করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থা ও দুর্গাপুর পুরনিগমকেও জানিয়েছেন কাউন্সিলরই। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে প্রশাসন মহল। কিন্তু কেন? স্রেফ বর্ষার জলই নয়, দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন কারখানার ব্রর্জ্য মিশ্রিত জল তামলা খাল বা নদী দিয়ে বেরিয়ে যায়। আর শহরে যে খালটি ভরাট করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ, সেই খালটির সঙ্গে এই তামলা নদী বা খালের সরাসরি যোগ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বর্ষার অতিরিক্ত জল প্রথমে ওই খালে জমা হয়। খালটি যখন জলে উপচে পড়ে, তখন সেই জল সোজা চলে যায় তামলা খাল বা নদীতে। বস্তুত, ওই থালের সঙ্গে তামলা নদীর সংযোগকারী খালটিই ইতিমধ্যেই আর্বজনায় বুজে গিয়েছে। অভিযোগ, খালটিকেও মাটি ও ছাই ফেলে বুজিয়ে ফেলার চেষ্টা চলছে। স্থানীয় কাউন্সিলর আলো সাঁতরার বক্তব্য, ওই কারখানা লাগোয়া খালটি যদি বুজিয়ে ফেলা হয়, তাহলে বর্ষার জল আর বের হওয়ার পথ থাকবে না। জল জমে যাবে দুর্গাপুর শহরের একটি বড় অংশে। এমনকী, শুকিয়ে যাবে তামলা নদীও। এদিকে ওই এলাকায় বসতি ও আবাসন মিলিয়ে আবার ১৬০০ মানুষেরও বাস।
আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থা বা এডিডিএ সূত্রে খবর, প্রায় বছর দশেক আগে কারখানা সম্প্রসারণের জন্য সাড়ে তিন একর জমি দেওয়া হয় ওই বেসরকারি সংস্থাকে। যে খালটি ভরাটের অভিযোগ উঠেছে, সেই খালটিও কারখানার জমির মধ্যে পড়ে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিজেদের জমির সীমার বাইরে গিয়ে অন্য জমি ভরাট করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। দুর্গাপুর পুরনিগমের মেয়র দিলীপ অগস্তি বলেন, বর্ষা আসার অনেক আগেই শহরের সমস্ত নিকাশি নালা পরিষ্কারের কাজ সেরে ফেলেছে পুরসভা। তামলা খাল বা নদী শহরের নিকাশির অন্যতম প্রধান মাধ্যম। তাই অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তাহলে বিষয়টি গুরুতর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.