ধীমান রায়, কাটোয়া: রাতারাতি ভাগ্যবদল। ৩০ টাকার লটারির টিকিট কেটে ৫০ লক্ষ টাকার মালিক এক রিকশাচালক। পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার বাসিন্দা গৌড় দাস এখন রীতিমতো সেলিব্রিটি। তাঁকে দেখতে ভিড় করছেন গুসকরার অনেকেই।
গুসকরা পুর এলাকার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে মুচিপাড়ায় ইটের গাঁথনি করা ছাউনি চালের ঘরে বসবাস গৌড় দাসের। বাড়িতে রয়েছেন বিধবা মা, স্ত্রী ও তিন সন্তান। রিকশা চালিয়ে সংসার চলে না। তাই জনমজুরির কাজেও যেতেন গৌড়ের মা তুলসী ও স্ত্রী প্রতিমা দাস। সন্তানদের মধ্যে ছেলে দীপক বড়। সে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। মেয়ে পায়েল ও দীপা সবে স্কুলে ভরতি হয়েছে। গৌড় জানিয়েছেন, তিনি রবিবার সকালে লটারির টিকিটটি কেটেছিলেন। ওইদিনই রিকশাচালক ইউনিয়নের সদস্যরা মিলে পিকনিক করার কথা ছিল। গৌড়বাবু সেই উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে পিকনিক বাতিল হয়। যথারীতি রিকশা নিয়ে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি। সকাল প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন গৌড়। তখন তাঁকে একপ্রকার জোরজবরদস্তি করেই এক হকার ওই টিকিটটি দিয়েছিলেন। তখন তাঁর কাছে মাত্র ৭০ টাকা পড়েছিল। তার মধ্যে ৩০ টাকার টিকিট কাটলে কী করে সংসার চালাবেন, সেই ভাবনাও ভেবেছিলেন গৌড়। তবে এক বন্ধুও বলায় টিকিটটি অবশেষে কিনেই ফেলেন রিকশাচালক।
রবিবার বিকেল নাগাদ গৌড় পাড়ার কাছে একটি কাউন্টারে টিকিটটি মেলাতে গিয়ে দেখেন প্রথম পুরস্কারের পাশে জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম। পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০ লক্ষ টাকা। তারপরেই রীতিমতো টেনশনও শুরু হয়ে যায়। প্রথমেই বাড়িতে গিয়ে বলেন স্ত্রী ও মাকে। তবে নিরাপত্তার কারণে প্রতিবেশীদের বলতে চাননি। কিন্তু টিকিট বিক্রেতার মাধ্যমে সে কথা তখন ছড়িয়ে গিয়েছে চতুর্দিকে। রবিবার বিকেল থেকেই গৌড়কে একবার চোখে দেখার জন্য অনেকেই ভিড় করেছেন তাঁর বাড়িতে। সোমবার গুসকরার একটি ব্যাংকে ওই টিকিট জমা করেছেন গৌড়বাবু। তিনি বলেন, “খুব ছোট ঘরে কষ্ট করে থাকতে হয়। তাই একটি ভাল বাড়ি করব। তার সঙ্গে ছেলেমেয়েদের ভাল করে লেখাপড়া শেখাবো।” তাহলে কি রিকশা চালানো ছেড়ে দিচ্ছেন গৌড়? জবাবে যদিও গৌড় বলেন, “রিকশা আর চালাবো না। তার পরিবর্তে একটি টোটো কিনব।”
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.