ফাইল ছবি।
দেব গোস্বামী, বোলপুর: বিশ্বভারতীর বিনয় ভবনের শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক রাজর্ষি রায়ের বিরুদ্ধে এবার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন ও প্রতারণার অভিযোগ গবেষকের। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অভিযোগ করেও নাকি মেলেনি সুরাহা। এবার বিচার পেতে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ করলেন ঐ মহিলা।
কলকাতার বাসিন্দা গবেষিকার অভিযোগ, উচ্চশিক্ষা লাভের স্বপ্ন নিয়ে পিএইচডি করার জন্য বিশ্বভারতীর বিনয় ভবনে ২০১৫ সালে ভরতি হন তিনি। বর্তমানে তিনি অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত। নথিভূক্তকরণের চার বছরের মধ্যে গবেষণার কাজ প্রায় পরিসমাপ্ত করে চূড়ান্ত উপস্থাপনার ব্যবস্থা করার জন্য তিনি তার গাইড বা পরামর্শদাতা অধ্যাপক রাজর্ষি রায়কে অনুরোধ করেন। তাঁর বিনিময়ে অশালীন দাবির সম্মুখীন হন বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত,নিয়ম অনুযায়ী যে কোনও গবেষক ও গবেষিকার ন্যূনতম দুইটি গবেষণাকৃত লেখা কোনও সেমিনারে উপস্থাপিত করার কথা এবং তা যাতে প্রকাশিত হয় তার ব্যবস্থা করার কথা গাইডের। এক্ষেত্রে গাইডের সঙ্গেই একসাথে কোথাও গিয়ে সেমিনারে তাদের যুগ্ম লেখা উপস্থাপিত না করলেও চলে। কিন্তু অধ্যাপক উক্ত গবেষিকাকে নিয়মিতভাবে চাপ দিতে থাকেন যাতে তিনি তাঁর সঙ্গে দূরে অন্য কোনও রাজ্যে বা বিদেশে কোথাও যান।
এছাড়াও গভীর রাত্রে ফোন কল এবং ভিডিও কল করে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগও করেন মহিলা। অভিযোগ, তিনি অন্য কারও সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে যাতে আবদ্ধ না হন তার জন্যও চাপ দেওয়া হয়। গবেষণার কাজের পরামর্শদানের বিনিময়ে বিভিন্ন সময় শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ রয়েছে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে অধ্যাপক গবেষিকাকে চরম অসহযোগিতা করতে শুরু করেন এবং রীতিমত ভয় দেখান এবং তার ভবিষ্যৎ জীবন নষ্ট করে দেবেন বলেও হুমকি দিতে থাকেন। এমতাবস্থায় ২০২২ সালের শুরুতে ঐ গবেষিকা শিক্ষা বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধানের কাছে অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০২২ সালের জুন মাসে গাইডের বিরুদ্ধে বিভাগীয় প্রধানকে লিখিতভাবে জানান। তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর বেণুধর চিনারা কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে লিখিত অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য গবেষিকাকে চাপ দেয়।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি এবং এ বিষয়ে অভিযোগকারীনিকে কোন কিছুই জানানো হয়নি। সম্প্রতি তথ্যের অধিকার আইন প্রয়োগ করে গবেষিকা জানতে পারেন বিশ্বভারতীর আভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি তাদের সুপারিশ জানালেও এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্তমানে বিশ্বভারতীর শিক্ষাবিজ্ঞান বিভাগ ও গবেষিকার গবেষণার কাজ আটকে রেখেছেন। বাধ্য হয়েই বৃহস্পতিবার সন্ধেয় শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ করেন গবেষিকা। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.