সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বাংলা ভাষা আজকের দিনে কতটা প্রাসঙ্গিক আর কতটা নয়, তা নিয়ে বিতর্ক চলতেই পারে। তবে বাংলা চর্চা থেকে বঙ্গভূমের বাঙালিই যে শতহস্ত দূরে চলে গিয়েছে, তার প্রমাণ বর্ধমান বিশ্ববিদ্য়ালয় চত্বরে সুবিখ্য়াত বাঙালি বিজ্ঞানীর নামফলকের বানান। বাংলা নামের বানান ভুল, অথচ ইংরাজির বানান একশো ভাগ সঠিক! এ নিয়ে সরব সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজন। অবিলম্বে বানান সংশোধনেরও দাবিও উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগেও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকাতে বেশ কিছু নামফলকে ভুল বানান চোখে পড়ে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর তা সংশোধন করা হয়। কিন্তু এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় মেঘনাদ সাহার নামের বানান ভুল লেখা রয়েছে রয়েছে তাঁর নামফলকে। ‘মেঘনাদ’-এর নামফলকে বানান হয়ে গিয়েছে ‘মেঘনাথ’! অথচ ইংরাজি বানানে কোনও ভুলই নেই।
যাতায়াতের পথে অনেকেরই চোখে পড়ছে এই ভুল বানান। রোজ এই বানান দেখে বিড়ম্বনায়ও পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের।অদ্ভুত বিষয় হল ইংরাজিতে বিজ্ঞানীর নামের বানান ঠিক থাকলেও ভুল বানান লেখা হয়েছে কেবল বাংলাতেই! বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা ইতিহাস ও পুরাতত্ব গবেষক সর্বজিৎ যশ বলেন, “এই ধরনের ভুল থাকা কাম্য নয়। শুধু বানান ভুল বললে ভুল হবে। বিজ্ঞানীর নামটাই ভুল হয়ে গিয়েছে। দৃষ্টিকটু তো বটেই। অবিলম্বে নামফলকটি সংশোধন করা প্রয়োজন।”
সম্প্রতি বর্ধমানে গোলাপবাগ মোড় থেকে কৃষ্ণসায়র পর্যন্ত রাস্তাটি সম্প্রতি সম্প্রসারণ করেছে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা। রাস্তার ধারে সৌন্দর্যায়নও করা হয়। সেই সময় রাস্তার ধারে অনেক ফলক বসানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট, তারামণ্ডল, বিজ্ঞান কেন্দ্র, চিড়িয়াখানার প্রবেশ পথের সামনে সেই ফলকগুলি লাগানো হয়েছিল। সেই ফলকগুলিতে প্রথম থেকেই অনেক বানান ভুল ছিল। যদিও ওই ফলক কে বা কারা বসিয়েছে তা নিয়ে বর্ধমান পুরসভা ও বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে ইতিমধ্যেই শুরু হয় চাপানউতোর। সেই সময় বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা দাবি করেছিল তারা ফলক বসায়নি। পুরসভার কাছে জানতে গেলে তারা দায় এড়িয়ে যায়। যদিও পরে ভুল বানানের ফলক আচমকাই বদল করা হয়। কিন্তু বাঙালি বিজ্ঞানীর নামের বানান ভুলের ফলকটি নজর এড়িয়েই গিয়েছিল সকলেরই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.