Advertisement
Advertisement
পুরোহিত খুন

নদিয়ার শান্তিপুরে পুরোহিতকে খুনের অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে

বিজেপির আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

a Priest allegedly killed by TMC goons in Nadia's Shantipur
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:October 10, 2019 7:57 pm
  • Updated:October 10, 2019 8:03 pm

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত,কৃষ্ণনগর: এক মন্দিরের পুরোহিতকে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঠাকুর দেখতে যাওয়ার নাম করে নবমীর রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। কথা দিয়েছিলেন, রাতেই বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু আর তার বাড়ি ফেরা হল না। প্রায় আড়াই দিন নিখোঁজ থাকার পর, বাড়ির কাছাকাছি একটি বিলের মধ্যে থেকে উদ্ধার হল তার দেহ। যা দেখে মৃত ব্যক্তির বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা খুন করেছে তাঁকে। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর থানার বাগআঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগদেবীতলা এলাকায়। ওই ব্যক্তিকে দলীয় কর্মী বলে দাবি করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই ব্যক্তিকে খুন করেছে। 

[আরও পড়ুন: ফটোগ্রাফির শখই কাড়ল প্রাণ, দার্জিলিং ঘুরে কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন রিষড়ার ব্যবসায়ী]

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই ব্যক্তির নাম সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়। বয়স বিয়াল্লিশ বছর। তাঁর বাড়ি বাগদেবীতলা এলাকাতেই। বাগদেবীতলা মন্দিরে তিনি পৌরহিত্য করতেন। নবমীর রাতে তিনি একাই ঠাকুর দেখতে যাবেন বলে বাড়ির লোকজনকে জানিয়েছিলেন। সেইমতো বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। স্কুটি চালিয়ে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে লক্ষ্মীনাথপুরে ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। রাতেই বাড়ি ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু রাত পেরিয়ে গেলেও সুপ্রিয় বাবু বাড়ি ফেরেননি। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহ উদ্ধারের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তুলে এবং দোষীদের গ্রেপ্তারির দাবিতে মৃতদেহ আটকে রেখে, রাস্তায় গাছ ফেলে, শান্তিপুর থেকে বাগআচড়া রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিশকেও। বেশ কয়েক ঘন্টা পর পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।

Advertisement

মৃত সুপ্রিয়বাবুর দাদা সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন,’ মঙ্গলবার সকালে লক্ষীনাথপুরে আমার ভাইয়ের স্কুটিটির সন্ধান পাই। অথচ ভাইয়ের খোঁজ মেলেনি। যা আমাদের কাছে সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে। পুলিশের কাছে ভাইয়ের নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। অথচ, পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। এলাকার লোকজন স্থানীয় একটি স্কুলঘর থেকে দুর্গন্ধ পেয়েছিলেন। পুলিশকে তল্লাশি চালানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু, পুলিশ তা করেনি। বৃহস্পতিবার সকালে যে জায়গা থেকে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে, সেই জায়গায় মৃতদেহ অন্য কোন জায়গা থেকে নিয়ে এসে ফেলা হয়েছে বলে আমাদের অনুমান। আমার ভাইয়ের খুনের ঘটনার সিআইডি তদন্ত করতে হবে। দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।’

[আরও পড়ুন: প্রয়াত তৃণমূলের শীর্ষ নেতা, রাজনৈতিক ভেদ ভুলে একসঙ্গে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন বিজেপিরও ]

এদিন নিহত সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তিনি মৃত পুরোহিত সুপ্রিয়বাবুর মা ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। জগন্নাথ সরকারের অভিযোগ,’ আমাদের দলের একনিষ্ঠ কর্মী সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃণমূল কংগ্রেস-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে। খুনের পর মৃতদেহ এক জায়গা থেকে নিয়ে এসে আরেক জায়গায় ফেলা হয়েছে। প্রমাণ গায়েব করার চেষ্টায় সহযোগিতা করেছে পুলিশ। আমাদের দলের কর্মী খুনের ঘটনার প্রকৃত তদন্ত করে অবিলম্বে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। সঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’ যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলা হয়েছে,’ যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। তবে, ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই। পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করুক, সেটা তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি ।’ পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমে তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মদের আসরে গন্ডগোলের জেরে খুন করা হতে পারে সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ওই খুনের ঘটনায় এলাকায় রয়েছে তীব্র উত্তেজনা।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement