দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ফের রাজ্যে মিলল করোনা আক্রান্তের খোঁজ। এবার শ্রীরামপুরের এক শ্মশান কর্মীর দেহে মিলল মারণ ভাইরাসের হদিশ। বর্তমানে ওই শ্মশানকর্মী বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আপাতত এই ঘটনায় গোটা শ্রীরামপুর এলাকায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ওই শ্মশান কর্মী কয়েকবছর ধরে অসুস্থ ছিলেন। পেটের টানে শ্মশানে কাজ করতেন। কিন্তু সেভাবে খাবার জুটত না তাঁর। ফলে অপুষ্টির কারণে টিবি রোগে আক্রান্ত হন। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হলেও সেভাবে পুষ্টিকর খাবার জুটত না। পেটের তাগিদে অনেক সময় খালি পেটেও শ্মশানে কাজ করতে হত তাঁকে।
ওই শ্মশানকর্মীর বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও তিন মেয়ে, মা ও ভাই আছেন। তবে লকডাউনের অনেক আগেই শ্মশানকর্মীর স্ত্রী ছোট মেয়েকে নিয়ে বিহারের বাড়ি চলে গিয়েছেন। তারপর থেকে স্ত্রী ও ছোট মেয়ে বিহারের বাড়িতেই রয়েছেন। এদিকে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ওই শ্মশানকর্মীর জ্বর হয়। তিনি শ্রীরামপুরেরই এক স্থানীয় চিকিৎসককে দেখান। তাতেও কোনও কাজ না হওয়ায় ১৯ এপ্রিল শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে ভরতি হন। সেদিনই হাসপাতাল থেকে তাঁর লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ২১ এপ্রিল পরীক্ষার রিপোর্ট আসলে জানতে পারা যায় যে তাঁর শরীরে মারণ ভাইরাস করোনা বাসা বেঁধেছে। এরপরই তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আক্রান্ত ওই শ্মশান কর্মীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
এদিকে এই ঘটনায় ওই শ্মশানকর্মীর মা, দুই মেয়ে, ভাই, শ্মশানে যিনি পৌরহিত্য করেন সেই পুরোহিত, দুই প্রতিবেশী-সহ মোট ১২ জনকে মণিকমল কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেকেরই লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তাঁদের লালারসের পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছায়নি।
ওই শ্মশানকর্মী যে এলাকায় থাকতেন সেখানকার কাউন্সিলর নিজে দাঁড়িয়ে থেকে আক্রান্তের বাড়ি-সহ আশেপাশের এলাকা কর্মীদের দিয়ে জীবাণুমুক্ত করান। পাশাপাশি প্রসাসনের পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে আক্রান্তের সংস্পর্শে আর কারা কারা এসেছেন। সেক্ষেত্রে শ্মশানে লকডাউনের পর থেকে যাদের দেহ সৎকার হয়েছে তাঁদের পরিজনদের সঙ্গে এই শ্মশানকর্মীর যোগাযোগ হয়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, শ্রীরামপুরে অধিকাংশ বাজার এলাকায় লকডাউন না মেনে বহু মানুষের জমায়েত হচ্ছে এখনও। তাই রোনা সংক্রমণ রোধে পুর এলাকার বাজারগুলি বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.