সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। সমস্যায় পড়েছেন দিন আনে দিন খায় মানুষরা। এই সময় এইসব মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ওয়েব স্টার সার্ভিস সোসাইটি’। প্রান্তিক মানুষদের খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট পৌঁছে দিচ্ছে তারা। এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘উপহার’। মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, এখনও পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে এক হাজার পরিবারের কাছে তা পৌঁছে গিয়েছে।
শুধু তাই নয়। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন থ্যালাসেমিয়া রোগীরাও। রক্তসংকট শুরু হয়েছে অনেক জায়গায়। তাঁদের জন্যও এগিয়ে এসেছে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এই উদ্যোগে তারা পাশে পেয়েছেন কৃষ্ণনগর শহরের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উড়ান’কে। যদিও এই দুই সংস্থার গাঁটছড়া বহুদিনের। গত বছর ‘ওয়েব স্টার’ খোঁজ পায় তেহট্ট এর রামচন্দ্রপুর সর্দার পাড়ার। যেখানে এখনও একজন ও কলেজে পা দেয়নি। সংগঠন ওই আদিবাসী গ্রামের বাচ্চাদের ন্যূনতম প্রয়োজন ও শিক্ষার দায়িত্ব নেয়। প্রতি সপ্তাহে অবৈতনিক শিক্ষার পাশাপাশি চলতে থাকে ছবি আঁকা, গান, নাচ আর তার সঙ্গে শিক্ষার সামগ্রী দেওয়া। দীর্ঘদিন কাজ করতে করতে ওই একশো জন বাচ্চার জন্যে আরও কীভাবে এগোনো যায়, তা ভাবতে গিয়ে সংগঠন কৃষ্ণনগর শহরের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উড়ান’-এর সন্ধান পায়। তবে থেকেই শুরু যৌথভাবে পথ চলা।
এই ‘উড়ান’ বর্তমানে উদ্যোগ নিয়েছে থ্যালাসামিয়া রোগীদের পাশাপাশি অন্য রোগীদের রক্তের যোগান দিতে। এর জন্য ফেসবুকে লাইভ অনুষ্ঠানের বন্দোবস্ত করেছে তারা। কলকাতা শহরের প্রথম সারির শিল্পীরা ‘উড়ান’-এর ফেসবুক পেজে লাইভ প্রোগ্রাম করেছেন ইতিমধ্যেই। লাইভ করেছেন বাংলাদেশের শিল্পী, গ্রিসের শিল্পীরা। তাঁরা শুধুমাত্র অনুষ্ঠানই করেননি, বলেছেন এ সময়ে সামাজিক দায়-দায়িত্বের কথাও। এমন কিছু বিভিন্ন পেশার মানুষ যাঁরা কেউ ব্যস্ত থাকেন চোর ডাকাত ধরতে, কেউ বা এলাকার উন্নয়ন মূলক কাজে, হাসপাতালে রোগীদের নিয়ে, তাঁর ‘উড়ান’-এর পেজ থেকে লাইভ অনুষ্ঠান করেন। শিল্পীর ভক্তরা লাইভ প্রোগ্রামে জানিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের রক্তের গ্রুপ। প্রয়োজনে কাজে আসছে সেই তথ্য। বেঁচে যাচ্ছে প্রচুর মানুষের প্রাণ। ‘উড়ান’-এর কর্মকাণ্ডে শামিল হয়েছেন গোলাম ফকিরের মতো শিল্পীও।
রাজ্যের বাউল সমাজের উৎসস্থল গোবরডাঙাতে প্রচুর শিল্পীরা লকডাউনের পরপরই ছিলেন খাদ্য সংকটে। ‘উড়ান’ তাঁদের পৌঁছে গেছে বেশ কিছু দিনের খাদ্য। গোলাম ফকিরের মতো মানুষ নিজে হাতে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন সেই সব খাবার। এই অস্থির সময়ে তারা করোনা যুদ্ধে একবারে সামনে থেকে যাঁকা লড়াই করছেন, তাঁদের কাছে মাস্ক, গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়েছে। রাস্তায় কর্মরত পুলিশকর্মী, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, গ্রামীণ ব্যাংক, সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে এই সকল প্রয়োজনীয় জিনিস। লকডাউনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোম ডেলিভারি করেছে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী মানুষের খাবার, ওষুধ। তাও সেটা আবার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.