সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: কেউ সারা বছর রাস্তায় কাগজ কুড়িয়ে তা বিক্রি করে। কেউ আবার প্লাস্টিকের বোতল কিংবা প্লাস্টিকের প্যাকেট কুড়িয়ে তা থেকেই ক্ষুন্নিবৃত্তি করে। কারও বয়স ১০, কারও ১২, কারও আবার ১৪। তাদের কাছে পুজো মানে আরও বেশি করে প্লাস্টিক কিংবা বোতল পাওয়া যাবে, তা থেকে দু’পয়সা বেশি লাভ ঘরে আসবে। পুজোয় জামা কাপড় কেনার চল তাদের নেই। তবে এবার অভিনব উদ্যোগ নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াল শিলিগুড়ির ইউনিক সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।
শপিং মলে নিয়ে গিয়ে প্রথমবার তাদের পছন্দ মতো জামা-কাপড় কিনে দিলেন সংগঠনের সদস্যরা। এর আগেও একাধিক সমতুল উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। তবে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। জানালেন সংগঠনের অন্যতম সদস্য শক্তি পাল। তিনি বলেন, “এই সমস্ত বাচ্চারা প্রায় কিছুই পায় না। প্লাস্টিক, বোতল কুড়িয়ে কতই বা আয় হয়? কপালে জোটে ফেলে দেওয়া খাবার, না হলে ব্যবহার করে বিক্রি করে দেওয়া হাতবদল হওয়া জামা। তাঁর দাবি, তাই কিছু এমন ছেলে-মেয়ের হাতে নতুন জামা তুলে দিতে চেয়েছিলাম। ক্ষুদ্র সামর্থ্য যেটুকু পেরেছি করা হয়েছে। পরবর্তীতে ইচ্ছে আছে আরও বেশি করে ছেলে মেয়েদের এমন উপহার তুলে দেওয়া হবে। ওদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেই আমাদের আনন্দ।”
এদিন প্রায় ৫০ জন এমন কচিকাঁচাদের হাতে জামাকাপড় তুলে দেন উদ্যোগীরা। সংগঠনের তরফে অনিন্দিতা চট্টোপাধ্যায় জানান, পুজোয় সবাই খুশি না হলে উৎসব সার্থক হয় না। আমরা চাই সবাই খুশি থাক। তাই সামর্থ অনুযায়ী করার চেষ্টা করি। আর যাদের জন্য এই উদ্যোগ তাদের প্রথমবার ঝাঁ চকচকে ঠাণ্ডা শপিং মলের ভিতর ঢুকে চোখের কোণ চিকচিক করে উঠেছে। তাদের মধ্যেই একজন রুবিয়া জানাল, “এমন মল শুধু রাস্তা থেকে দেখেছি। ভিতরে ঢুকতে পারব এমনটা ভাবতে পারিনি। নইলে তো নীল জামা পরা লোকগুলি তাড়িয়ে দেয়।” বিস্ময়ের ঘোর কাটেনি শীতল, সামু, নীলমদেরও। বিভিন্ন মহল থেকে ইউনিক সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকেই। এদিন সংগঠনের তরফে দু’বছর আগে ট্রেন দুর্ঘটনায় পা কাটা পড়া বিনীতা বর্মনকে ট্রাই সাইকেল দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.