সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ভাল রান্না করতে পারেন না, এই ছিল বছর উনিশের নববধূর ‘অপরাধ’৷ তার জেরে ওই তরুণীকে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে৷ খুনের পর দেহ ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান মৃতার পরিজনেরা৷ তরুণীর বাবা-মা ওই হাসপাতাল থেকে তাঁদের মেয়ের দেহ উদ্ধার করেন৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি থানায় ঘটনার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ খুনের বহুক্ষণ পর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে ওই তরুণীর স্বামী৷
প্রায় সাড়ে তিনমাস আগে সম্বন্ধ করেই বিয়ে হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার হার্ডউড পয়েন্ট উপকূল থানার ঠাকুরচক গ্রামের বাসিন্দা শিল্পার৷ তাঁর স্বামী সুশান্ত হালদার কুলপি থানার আশাপুরের বাসিন্দা৷ পলাশ গ্রামেই একটি গেঞ্জি কারখানায় কাজ করত সে৷ বিয়ের পর মাসদুয়েক শ্বশুরবাড়িতে ভালই কাটছিল শিল্পার। অশান্তি শুরু হয় মাসখানেক আগে। অভিযোগ, ভাল রান্না করতে না পারায় শ্বশুরবাড়িতে প্রায়ই গঞ্জনা শুনতে হত ওই নববধূকে। গঞ্জনা সহ্য করতে না পেরে শিল্পা কয়েকবার বাপেরবাড়িও চলে যান৷ বাবা-মাকে জানান, আর শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাবেন না। সংসার করতে ভাল লাগছে না৷ তবে প্রতিবারই বাবা-মা বুঝিয়ে তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠান৷ মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা-মা শ্বশুরবাড়িতে মেয়েকে মানিয়ে নেওয়ার পরামর্শও দেন৷
মৃতার পিসতুতো দাদা চন্দন মণ্ডল বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শিল্পার শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা ফোন করেন৷ জানায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে নববধূ৷ তাঁকে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়৷ পরেরদিনই হাসপাতালে এসে মহিলা বিভাগে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিল্পার খোঁজ পাইনি৷ তখন বিভিন্ন বিভাগে খোঁজখবর শুরু করি৷ আমাদের জানানো হয় ওই নামে কেউ হাসপাতালে ভরতি হননি। তবে রাত থেকেই অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলার দেহ হাসপাতালে পড়ে রয়েছে বলেও জানান হাসপাতাল কর্মীরা। দৌড়ে গিয়ে দেহটি দেখি৷ তখনই আমাদের শিল্পার খোঁজ পাই৷’’
এরপর শিল্পার পরিজনেরা ডায়মন্ড হারবার থানায় যান। পরে কুলপি থানায় তাঁরা মৃতার স্বামী পলাশ, শ্বশুর সুশান্ত হালদার ও শাশুড়ি নমিতা হালদারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। মৃতার স্বামী পলাশ হালদার শুক্রবারই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। তবে শিল্পার শ্বশুর, শাশুড়িকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.