Advertisement
Advertisement

Breaking News

ফুলশয্যা

ফুলশয্যায় করোনা কাঁটা, লকডাউনে বিয়ে হলেও স্বামীকে ছেড়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে নববধূ

২৮ ঘন্টার পরিবর্তে আপাতত ১৪ দিন কালরাত্রি পালন করতে হবে নবদম্পতিকে!

A newly married lady sent to home quarantine amid corona virus
Published by: Sayani Sen
  • Posted:April 20, 2020 9:17 pm
  • Updated:April 20, 2020 9:17 pm  

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: লকডাউনের জেরে নদী পেরিয়ে, সীমানা পার করে পাত্র-পাত্রীর বিয়ে হল ঠিকই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মুখে মাস্ক, হাতে স্যানিটাইজার ঘসে মালাবদল, সিঁদুর দানও হল। কিন্তু ফুলশয্যাতেও লকডাউন। হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হল নববধূকে। তবে প্রশাসনের চোখরাঙানির জন্য নয়, বর বাবাজীবনের সচেতন অভিভাবকদের নির্দেশে। নিয়ম অনুযায়ী, ২৮ ঘন্টার পরিবর্তে আপাতত ১৪ দিন কালরাত্রি পালন করতে হবে নবদম্পতিকে। অভিনব ঘটনার সাক্ষী থাকল রেলশহর চিত্তরঞ্জন ও ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া সদরের বাসিন্দারা।

পাত্র জামতাড়ার অনিরুদ্ধ। পাত্রী চিত্তরঞ্জনের আরতি। মাস ছয়েক আগে থেকেই বিয়ের দিনক্ষণ নির্ধারণ ছিল। ঠিক হয়েছিল ৪ বৈশাখ ১৪২৭ ইংরাজি বছরের ১৭ এপ্রিল বিয়ে হবে আসানসোলের কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের জেরে লকডাউন লেগে গেল দেশজুড়ে। তাই বিয়ের পরিকল্পনা শিকেয় তুলে আপাতত পরিস্থিতির উপর নজর রাখছিলেন পাত্রপক্ষ। কিন্তু পাত্রীপক্ষ নাছোড়বান্দা। বাবা-মা হারা আরতির অভিভাবক বলতে দাদু, দিদা ও মামা। দাদু একসময় কাজ করতেন চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানায়। কিন্তু এখন অবসরপ্রাপ্ত। রোজগেরে বলতে মামা। তাও সরকারি চাকরি করেন না। এই পরিস্থিতিতে নাতনির বিয়ে পিছিয়ে যাক চাইছিলেন না দাদু, দিদারা। শেষ পর্যন্ত পূর্বনির্ধারিত লগ্ন মতেই বিয়ের সিদ্ধান্ত হল। তবে তার জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে দু’পক্ষকেই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুই আক্রান্তের ঘনিষ্ঠ ৪১ জনই করোনা নেগেটিভ, স্বস্তিতে প্রশাসন]

পাত্র অনিরুদ্ধের মা প্রাক্তন স্কুল শিক্ষিকা। চার দিদিও স্কুলের শিক্ষিকা। তাঁরা কেউ থাকেন ওড়িশায়, কেউ জামশেদপুরে, কেউ ধানবাদে। আত্মীয় স্বজনরা সব আসানসোলে। বিয়েতে কেউই আসতে পারবেন না। বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের সীমানায় কড়াকড়ি। এদিকে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের দরজা বন্ধ লকডাউনে। তাই সিদ্ধান্ত হল জামতাড়ার স্থানীয় মন্দিরে নমো নমো করে ২-৩ জনকে সঙ্গে নিয়ে বিয়ে হবে।

কিন্তু পাত্রী চিত্তরঞ্জন থেকে আসবে কী করে? শেষ পর্যন্ত সিধু-কানু ঘাটের অজয় নদী হাঁটা পথে পার করে পাত্রের সহযোগিতায় পাত্রী আরতি ও তাঁর মামা ভোর ৬ টা নাগাদ পৌঁছে যায় নদীর ওপারে। সেখান থেকে গ্রামের রাস্তা ধরে পাত্রপক্ষের গাড়িতে করে সোজা মন্দিরে। বিয়ে হয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। হোয়াটসঅ্যাপ এবং জুম অ্যাপের মাধ্যমে বিয়ের সাক্ষীও থাকেন দূরদূরান্তের আত্মীয়রা। কিন্তু বিয়ের পর নববধূর ঠাঁই হল না শ্বশুরবাড়িতে। পাত্রের দিদিরা আলোচনা করে পরামর্শ দিলেন নববধূ ভিনরাজ্যের। সবটাই যখন নিয়ম মেনে হল তখন সরকারের নির্দেশ মেনে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হোক তাঁকে। তবে হোম কোয়ারেন্টাইনে। অনিরুদ্ধদের অন্য একটি ফাঁকা বাড়িতে রাখা হয় নববধূকে। নিয়ম অনুযায়ী, রবিবার ১৯ এপ্রিল ফুলশয্যা হওয়ার কথা ছিল। কার্যত লকডাউন লাগু হল ফুলশয্যায়। তবে পাত্রপক্ষের এই সিদ্ধান্তে খুশি পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনরাও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement