চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: একাধারে তিনি মেয়র-বিধায়ক, অন্যধারে পার্টির জেলাসভাপতি। এমনিতেই মেয়রের অফিসের বাইরে ভিড় থাকে নিত্যদিন। এদিনও ছিল। কেউ আসছেন শৌচালয় তৈরির আবেদন নিয়ে। কেউ পাচ্ছেন না বিধবা ভাতা। নানাবিধি সমস্যার মাঝে মেয়রের অফিসে ছোট্ট শিশুকে নিয়ে হাজির মা। ‘স্যার আমার ছেলের গলায় একটা গান শুনবেন? শুনুন না স্যার।’
ব্যস্ততম সময় একি আবদার! বিষ্ময় বিরক্তি নিয়ে গান শোনা শুরু করেন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ছোট্ট শিশুটি দরাজ গলায় গেয়ে ওঠে ‘হাম জিয়েঙ্গে অউর মরেঙ্গে অ্যাই বতন তেরে লিয়ে- দিল দিয়া হ্যায় জান ভি দেঙ্গে অ্যায় বতন তেরে লিয়ে।’ গান শুনে মেয়র ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান শুন্ডির রাজার মতো। মেয়রের আবদারে ‘তু মেরা ধর্মা’, ‘মেরা রং দে বসন্তী’র মতো এক এক করে গান শোনায় ছোট্ট সোয়েল।
পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র শেখ সোয়েল তনবীর। তার জাতীয়তাবাদী গান শুনিয়ে মুগ্ধ করে দিচ্ছেন সবাইকে। সোয়েলের মা সাবানা ইয়াসমিন বলেন, “ও চার বছর থেকেই গান গাইছে। টিভি দেখে, এফএম শুনে, মোবাইলে গান বাজিয়ে গান শোনে। কিন্তু বাড়ির আর্থিক পরিস্থিতি ভালো না থাকায় ওকে গান শেখানো যাচ্ছে না।” তিনি জানান, সোয়েলের বাবা শেখ সাবির আলি জামুড়িয়ার প্রাইভেট কারখানায় কাজ করেন। মূলত দেশভক্তির গান বেশি গাইতে ভালবাসে সে। জামুড়িয়ার বাসিন্দারা তাঁর নাম দিয়েছেন ছোটা ভারত কুমার।
শুধু দেশভক্তির গান নয় সোয়েল অসাধারণ ছবিও আঁকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজির সঙ্গে তার আঁকার খাতায় স্থান পেয়েছে বায়ুসেনার কম্যান্ডার অভিনন্দনের বর্তমানের ছবিও। মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, সোয়েলের গান শুনে তিনি অভিভূত। তাই প্রতিভার যেন ঠিকঠাক মূল্যায়ন হয় তার জন্য ছোট্ট সোয়েলের গান শেখানোর সমস্ত দায়িত্ব তিনি নেবেন। এই শুনে হাসি মুখে বাড়ি ফিরে যান সোয়েলের মা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.