ছবি: প্রতীকী।
দেবব্রত মণ্ডল, ক্যানিং: রবিবার ছিল আন্তর্জাতিক সাপ দিবস। সেই আন্তর্জাতিক সাপ দিবসেই কালাজ সাপের কামড়ে অসু্স্থ মা ও দুই মেয়ে। চিকিৎসা না করিয়ে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় ওঝার কাছে। পরিণতি হল মৃত্যু। মৃত শিশুর নাম হালিমা সরদার(৬)। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিং থানার নিকারিঘাটা পঞ্চায়েতের পাঙ্গাশখালি গ্রামে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, পাঙ্গাশখালি গ্রামের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্জাক সরদার। তাঁর দুই মেয়ে। ওই ব্যক্তি আন্দামানে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। বাড়িতে থাকতেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে রেশমা, হালিমা সরদার। রেশমা পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। হালিমা পড়ে প্রথম শ্রেণিতে। অন্যান্য দিনের মতো শনিবার রাতে খাওয়া-দাওয়া করে মা ও মেয়েরা ঘুমিয়েছিলেন। গভীর রাতে বিছানার মধ্যে মা ও দুই মেয়েকে কালাজ সাপে কামড় দেয়। রাত দুটো নাগাদ বুঝতে পারেন ছলেমা। তিনি বিছানার মধ্যে সাপটি দেখতে পেয়ে মারার জন্য উদ্যত হলে সাপটি পালিয়ে যায়। গভীর রাতে ঘটনার কথা প্রতিবেশীদেরকে জানান তিনি। কিন্তু চিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি।
উলটে স্থানীয় এক গুণিনের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রবিবার সকাল ছ’টা পর্যন্ত চলে ঝাড়ফুঁক। পরিস্থিতি খারাপ হলে হাল ছেড়ে দেয় ওঝা। প্রতিবেশিরা তড়িঘড়ি আক্রান্তদের ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য। সাড়ে ছ’টা নাগাদ মা-মেয়েকে ক্যানিং মাতৃমা’তে ভরতি করা হয়। হালিমাকে তড়িঘড়ি প্রতিষেধক দেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে। তবে ওঝা গুণিনের কাছে অতিরিক্ত সময় নষ্ট করায় শেষরক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় ছোট্ট হালিমার। অন্যদিকে, ছলেমা সরদার একটু সুস্থ বোধ করায় তিনি বাড়িতে চলে যান। ঘণ্টা দেড়েক পর আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পাশাপাশি রেশমার অবস্থা সঙ্কটজনক হলে তাকে প্রথমে বারুইপুর এবং পরে আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.