সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ফের গণপিটুনির ঘটনা ঘটল রাজ্যে। এবার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের দপ্তরের অদূরেই বেঁধে রেখে মারধর করা হল এক কিশোরকে। বুধবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানে। জানা গিয়েছে, চোর সন্দেহে একটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা ওই কিশোরকে মারধর করে। ইতিমধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কিশোরকে উদ্ধার করেছে। তবে ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা দোকান মালিক।
বিবেক নামের ওই কিশোর বর্ধমান স্টেশন চত্বরেই থাকে। খাবার জোগাতে কাগজ-প্লাস্টিক কুড়োয়। সূত্রের খবর, বুধবার আরও দু’জনের সঙ্গে বর্ধমানের হকার্স মার্কেট এলাকায় কাগজ কুড়োচ্ছিল বিবেক। সেখানে একটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকানের বিভিন্ন সামগ্রী ফুটপাথ ও মার্কেটের ভিতরের গলিতে ফেলে রাখা ছিল। সেখানেই কাগজ-প্লাস্টিকও পড়েছিল। জানা গিয়েছে, প্লাস্টিকের সঙ্গে সেখানে পড়ে থাকা ধাতব বস্তু কুড়িয়েছিল ওই তিন কিশোর। সেই সময়ই দোকানের মালিক ও কর্মীরা ছুটে আসে। বিবেকের দুই বন্ধু পালিয়ে গেলেও তাকে ধরে ফেলে দোকানের মালিক। এরপরই তাকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারতে শুরু করে তাঁরা। স্থানীয় কয়েকজন দোকানদারের নজরে পড়তেই খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
কিছুক্ষণ পর বর্ধমান থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে। জানা গিয়েছে, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত দোকান মালিক আশিস চক্রবর্তী দোকানেই ছিল। সাংবাদিকদের প্রশ্নে সে মারধরের কথা স্বীকারও করে। যদিও বেঁধে মারধর করা হয়নি বলেই দাবি তার। দোকান মালিক বলে, “বাইরে দোকানের জিনিসপত্র রাখা ছিল। ওরা চুরি করছিল। তাই চড় মারা হয়েছে।” কিন্তু চুরি করলেও পুলিশে না দিয়ে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে গণপ্রহার কেন দেওয়া হল, সেই প্রশ্নে নিরুত্তর থাকে সে। এরপর পুলিশ পৌঁছনোর আগেই দোকান ছেড়ে চলে যায় মালিক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। বিল পাশের পরও একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে রাজ্যে। কিন্তু কেন? উঠছে প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.