কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা।
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ‘বাবা, তুমি খুব ভাল থেকো’, মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়েই অকালে নিজের জীবন শেষ করে দিল কিশোর। পড়ার ঘর থেকে উদ্ধার করা হল ঝুলন্ত দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) ডায়মন্ড হারবারের রাখালঠাকুরতলায়। কিশোরের আত্মহত্যার কারণ কী, তা নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে পরিবার।
জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম অনিকেত গোস্বামী। বয়স ১৭ বছর। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। ডায়মন্ড হারবারের রাখালঠাকুরতলায় বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত অনিকেত। তার বাবা মানস গোস্বামী ডায়মন্ড হারবারেই একটি হোটেলের নিরাপত্তা কর্মী। তিনি জানান, “সকাল থেকে বেশ স্বাভাবিকই ছিল অনিকেত। দুপুরে মোবাইলে ছেলে মেসেজ পাঠাল, বাবা তুমি খুব ভাল থেকো। মনটা তখনই ‘কু’ ডাক দিল। দুরুদুরু বুকে বাড়ি ফিরছিলাম। বাড়িতে ঢোকার আগেই আশঙ্কাটা সত্যি হয়ে গেল। স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে এসে খবরটা জানায়। কিন্তু ও কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল বুঝতেই পারছি না।”
প্রতিবেশীরা জানান, বাবা-মায়ের বড় আদুরে ছিল অনিকেত। সামান্য আয়েও ছোট থেকেই যখন যা চেয়েছে বাবা সঙ্গে সঙ্গে ছেলেকে দিয়েছেন। ছেলের চাহিদা মতো মোবাইল, মোটরবাইক, টিভি, সবকিছুই কিনে দিয়েছিলেন বাবা-মা। তারপরও কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল ওই কিশোর কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না প্রতিবেশীরা। মৃত কিশোরের মা রেখাদেবী ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, “সকালে স্নান সেরে ঘরেই দুপুরের খাবার দিয়ে যেতে বলল অনি। কিছুক্ষণ পর খাবার দিতে গিয়ে দেখি ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। পিছনের জানলা দিয়ে দেখি গলায় গামছা বেঁধে ঝুলছে।”
দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে প্রতিবেশীদের সাহায্যে তড়িঘড়ি নামিয়ে ওই কিশোরকে ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন তাকে। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ। কিশোর ছাত্রের অকাল মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় শোকের ছায়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.