Advertisement
Advertisement

Breaking News

একঘরে পরিযায়ী শ্রমিক

স্কুল বারান্দার হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে বাড়ি ফেরায় গ্রামে ‘একঘরে’ শ্রমিক পরিবার

কাশীপুরের পাবড়া পাহাড়ি গ্রামের ঘটনায় মুদি, ধোপা, নাপিত - সকলের বয়কটের মুখে ওই পরিবার।

A migrant labourer family isolated from the society as he comes from quarantine to his home

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 23, 2020 5:00 pm
  • Updated:May 23, 2020 5:00 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ছত্তিসগড় থেকে গ্রামে ফিরে চিকিৎসকের পরামর্শমতো হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু গ্রামের ষোল আনা (গ্রামের সদস্যদের নিয়ে তৈরি বিশেষ কমিটি) জানিয়ে দেয়, ঘরে থাকা যাবে না। তাই তাঁর ঠাঁই হয় গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায়। কিন্তু আমফানের প্রভাবে প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে তিনি বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হন। তাতেই ঘটে বিপত্তি। গ্রামের ষোল আনার ফতোয়ায় ওই পরিবারকে ‘একঘরে’ করে রাখার অভিযোগে ওঠে পুরুলিয়ার কাশীপুরে।

কাশীপুর ব্লকের আগরডি–চিত্রা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাবড়া পাহাড়ি গ্রামের এই ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ওই পরিযায়ী কর্মীর পরিবার। ওই পরিবার প্রশাসনের কাছে মৌখিক অভিযোগও করে। তবে কাশীপুরের বিডিও সুদেষ্ণা দে মৈত্র বলেন, “বিষয়টি এরকম নয়। খবর পাওয়া মাত্রই আমরা খোঁজ নিয়েছি। তবুও ওই পরিবারের প্রতি আমাদের আলাদাভাবে নজর রইল। যাতে কোনও সমস্যায় না পড়েন।” দেশে করোনা সংক্রমণের প্রায় প্রথম থেকেই পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন প্রচার করেছিল, এই রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে কখনই যেন কাউকে মানসিকভাবে আলাদা করে রাখা না হয়। বাঘমুন্ডি ব্লক প্রশাসনও ঘরে থাকার বার্তা দিয়ে ফোনে, মেলে যোগাযোগ সুদৃঢ় করার কথা বলে। কিন্তু তারপরেও এই ছোঁয়াচ এড়াতে ‘একঘরে’ করে রাখার ঘটনা ঘটল।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আমফানের তাণ্ডবে ধ্বংস হয়েছে কয়েকশো ট্রলার, ইলিশের মরশুমে চিন্তায় মৎস্যজীবীরা]

সূত্রের খবর, ওই পরিযায়ী শ্রমিকের নাম নিত্যানন্দ মাহাতো। তাঁর বাড়ি ওই গ্রামেই। তিনি ছত্তিসগড়ের বল্লাবাজার জেলায় নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজে যান। গত ১৫ মে অন্যান্য শ্রমিকের সঙ্গে জেলায় পা রেখে গ্রামে আসেন। তবে তার আগে তিনি পুরুলিয়া দু’নম্বর ব্লকের কুস্তাউর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শারীরিক পরীক্ষা করান। কিন্তু পরে গ্রামের সিভিক ভলান্টিয়ারের কথামতো আবার তিনি কাশীপুরের কল্লোলী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান। সেখানে পুনরায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তাঁকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা বলা হয়। নিত্যানন্দর কথায়, “একদিন ঘরে থাকার পরেই গ্রামের ষোল আনা আমাকে বাড়িতে থাকতে নিষেধ করে। ফলে স্কুলের বারান্দায় ছিলাম। কিন্তু ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় ঘরে চলে আসতে বাধ্য হই। তারপরই আমার পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়েছে।”

[আরও পড়ুন: ফের রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত বীরভূম, সাঁইথিয়ায় বোমাবাজিতে মৃত তৃণমূলের সক্রিয় সদস্য]

ষোল আনার ফতোয়ায় তাঁর পরিবার গ্রামের মুদি দোকান থেকে জিনিসপত্র কিনতে পারছেন না। গ্রামের নলকূপ থেকে জল নেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বন্ধ ধোপা, নাপিতও। তবে গ্রামের উপপ্রধান মন্মথ মাহাতো বলেন, “বিষয়টি একঘরে নয়। আমরা ১৪ দিন ওনাকে বাড়ির বাইরে থাকতে বলেছিলাম। তাতে সকলের ভাল হবে। কিন্তু উনি বাড়ি চলে এসেছেন।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement